Logo
Logo
×

সারাদেশ

অনুমতি ছাড়াই আউটসোর্সিংয়ে ৪ জনকে নিয়োগ দেন তহশিলদার

Icon

মোতাহার হোসেন, মণিরামপুর

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ০৪:২১ পিএম

অনুমতি ছাড়াই আউটসোর্সিংয়ে ৪ জনকে নিয়োগ দেন তহশিলদার

অফিসে কাজের চাপ অনেক। দম ফেলারও সময় নেই।  জনবল সংকটের এমন অজুহাতেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ দেন চারজনকে। তার দাবি, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে, বিষয়টি জানেনই না উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)।

ঘটনাটি যশোরের মণিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের। ওই অফিসে তহশিলদার হিসেবে কাজ করছেন বিষ্ণুপদ মল্লিক।

স্থানীয়দের দাবি, ঘুস বাণিজ্য সহজ করতেই ওই চারজনকে নিয়োগ দিয়েছেন বিষ্ণুপদ। ঘুসের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি।

অনেকেরই দাবি, ইউনিয়ন তহশিলদার বিষ্ণুপদের ভূমি অফিসে যে জনবল রয়েছে তা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়েও নেই। অফিসে ঘুস ছাড়া কোনো ফাইল নড়ে না অভিযোগ সেবা গ্রহণকারীসহ স্থানীয়দের।

অভিযোগ রয়েছে, বিষ্ণুপদ নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘুস আদায়ে এই ভূমি অফিস গড়ে তুলেছেন ঘুসের সাম্রাজ্যে। কাজের দোহাই দিয়ে শুধু আউটসোর্সিংয়ে তিনি বাদশা মোল্যা, চয়ন কুমার পাল, শুভংকর কর, রিপন কুমার কুন্ডু নামে চারজনকে নিজের মতো করে নিয়োগ দিয়েছেন। এর বাহিরে হালিম মোল্যা ও মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন কাজ করেন। এছাড়া অফিস সহায়ক হিসাবে কাজ করেন আশিকুল ইসলাম।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষ্ণুপদ বলেন, ‘কাজ সামলাতে ও কাগজপত্র খোঁজার জন্য আউটসোর্সিংয়ে চারজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত করেই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, হালিম মোল্যা তাকে পানি খাওয়ান এবং মুজিবুর রহমান তার নাস্তা এনে দেন।

এ ব্যাপারে এসিল্যান্ড নিয়াজ মাখদুম বলেন, ‘কোনোভাবেই চারজনকে দিয়ে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করার বিধান নেই। তাকে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি এ অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের একটি দল।  জমির নামজারি, কাগজপত্র দেখিয়ে দেওয়া এবং খাজনা আদায়ের ক্ষেত্রে গ্রাহক সেবার নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও সেবা গ্রহণকারীদের হয়রানিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।

দুদকের অভিযান চলাকালে স্থানীয় নেহালপুর গ্রামের আলমগীর শরীফ ও আব্দুল খালেক গাজী বিষ্ণুপদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানির বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন। আলমগীর শরীফ দুদকের টিমের কাছে অভিযোগ করেন, তার জমি নামজারি করতে বিষ্ণুপদ ২৪ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন।

এছাড়া স্থানীয় আম্রঝুটা গ্রামের আব্দুল মজিদ জানান, তিনি পৈতৃক জমির খাজনা দিতে গেলে তার কাছে অতিরিক্ত বিশ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন বিষ্ণুপদ। এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিষ্ণুপদ মল্লিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

অভিযান শেষে তহশিলদার বিষ্ণুপদ মল্লিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক আল-আমিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের নিশ্চিত করেন।

 

 

মণিরামপুর নেহালপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম