সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমানকে রংপুর বিভাগে বদলি করা হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে সুনামগঞ্জের বিশম্ভরপুর উপজেলার ইউএনও মফিজুর রহমানের প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন উপজেলার ছাত্র-জনতা। 

অভিযোগ রয়েছে, বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে সীমান্তের চোরাচালানসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন ইউএনও মফিজুর রহমান। 

এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়ম, পর্যটন স্পটের সংস্কার ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজে অবহেলার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব অনিয়মের বিষয়ে বিশম্ভরপুরের স্থানীয় সাধারণ ছাত্র-জনতা উপজেলা ইউএনও প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলন বানচাল করতে নানা অপকৌশল করেন ইউএনও। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার ডাকে বিশম্ভরপুর ও কারেন্টের বাজারে মানববন্ধনে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীদের দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করানো হয়। এতে আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে ওঠে। 

এদিকে ইউএনও মফিজুরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেন নিয়ে দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন দৈনিকে নিউজ প্রকাশিত হয়। 

সর্বশেষ গত সপ্তাহে ছাত্র-জনতার ব্যানারে ইউএনওর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে এলাকার হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। এ সময় জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন এবং দশ কর্মদিবসের মধ্যে ইউএনও মফিজুরকে বিশ্বম্ভরপুর থেকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক ও মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। 

এর ধারাবাহিকতায় বিশম্ভরপুর ইউএনও মফিজুর রহমানকে রংপুর বিভাগে বদলি করা হয়েছে। গত ২৪ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা মফিজুর রহমানকে রংপুর বিভাগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পদায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও তার নিজ অধিক্ষেত্রে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য The Code of Criminal Procedure, 1898 এর section- 144  এর ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।

জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।