Logo
Logo
×

সারাদেশ

গ্রেফতারের একদিন পর জামিনে মুক্ত বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

গ্রেফতারের একদিন পর জামিনে মুক্ত বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা

কুড়িগ্রামে গ্রেফতারের একদিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা। বুধবার কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের জামিন দেন।

এর আগে মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাটে মহিষের ব্যাপারীর কাছে জোরপূর্বক চাঁদাবাজির অভিযোগে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহাবুবার রহমান (৫৮) এবং জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠক আলমগীর হোসেনকে (২৭) আটক করে থানায় দেয় সেনাবাহিনী। পরে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেন ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। এ ঘটনা কুড়িগ্রামে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।

পুলিশ বুধবার কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করলে আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাপুর হাটের ইজারা নিতে গিয়ে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা পান বিএনপি নেতা মাহাবুবার রহমান। ওই ইজারায় অংশীদারিত্ব নেয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন নেতা; কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের অফিস আদেশ না নিয়ে তারা হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে টাকা আদায় শুরু করেন। এ কারণে তারা আটক হলেও ইজারার বৈধতার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। মামলা হওয়ার পর উপজেলা পরিষদ থেকে ইজারার অনুমোদনপত্র সংগ্রহ করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ফেনী থেকে আসা আনোয়ার হোসেন আজাদ নামে এক ব্যবসায়ী যাত্রাপুর হাটে ১৭টি মহিষ ক্রয় করেন। এ সময় বিএনপি নেতা মাহাবুবার রহমান ও  বৈষম্যবিরোধী নেতা আলমগীরের লোক ব্যবসায়ী আজাদের কাছে খাজনা বাবদ প্রতি মহিষের জন্য ৫শ টাকা করে ৮ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করেন। কিন্তু বিনিময়ে তাকে রশিদ দেওয়া হলেও বিক্রি চালান কপি সরবরাহ করেননি। চালান কপি ছাড়া পশুবাহী পরিবহণ নিয়ে যেতে পথে সমস্যা হতে পারে জানালেও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেননি ইজারাদারের লোকজন। পরে ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি কুড়িগ্রাম সেনাবাহিনীকে জানান। সেনাবাহিনীর একটি দল তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এর সত্যতা যাচাইয়ে বিএনপি নেতা মাহাবুবার রহমান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতা আলমগীরকে আটক করেন। পরে তারা বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে না পারায় তাদের দুজনকে সদর থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সদর থানায় চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে মাহবুবার রহমান জানান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দরপত্র মোতাবেক আমি সর্বোচ্চ দরে হাটের ইজারা পাই। কিন্তু আমাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাগজ না দেওয়ায় আমি ক্রেতাকে শুধু রশিদমূলে মহিষপ্রতি ৫শ টাকা গ্রহণ করি। আমাকে সময় দিলে আমি কাগজ প্রদান করতে পারব জানালেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভীন জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দরপত্র আহ্বান করলেও কাঙ্ক্ষিত দরপত্র ক্রয়কারী না থাকায় খাস আদায় দরপত্রমূলে মাহবুবার রহমানকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত চিঠি ২৭ মে স্বাক্ষর করেছি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ জানান, জোরপূর্বক অবৈধভাবে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে রাতেই থানায় মামলা হয়েছে। পরে আসামিদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আশরাফ আলী বলেন, একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাহবুবার রহমান এক কোটি ১১ লাখ ২০০ টাকা দরদাতা হিসেবে যাত্রাপুর হাট ইজারা গ্রহণ করেন। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লিটন চন্দ্র আসামিদের চার্জশিট না আসা পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম