Logo
Logo
×

সারাদেশ

সড়কে নিম্নমানের ইট-মাটির ব্যবহার, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

Icon

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম

সড়কে নিম্নমানের ইট-মাটির ব্যবহার, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

সড়কে নিম্নমানের ইট-মাটির ব্যবহার, ছবি: যুগান্তর

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় দীর্ঘদিন পর সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হলেও নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট, ইটের গুঁড়া ও মাটি ব্যবহারে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নিম্নমানের ইটের খোয়া ও বালুর পরিবর্তে মাটি মিশিয়ে রাতের অন্ধকারে সড়কের ম্যাকাডম নির্মাণ করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতেও দেখা গেছে ছাত্র সমন্বয়ক ও এলাকাবাসীকে। 

স্থানীয়দের অভিযোগে নির্মাণাধীন সড়কে গিয়েও দেখা যায়, ঠিকাদার সবার অভিযোগ উপেক্ষা করে জলাবদ্ধ  সড়কে ওইসব নিম্নমানের ইটের খোয়া ও মাটি ফেলে রুলার দিয়ে সমান করে উপরে বালু ছিটিয়ে দিচ্ছে।

জানা গেছে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে পৌণে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের কুটুম্বপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কেশরা পর্যন্ত প্রায় ৬.২৫ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের টেন্ডার পায় ওমর ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৪টি স্থানে আরসিসি সড়ক ও একটি কালভার্ট রয়েছে। সড়কটির ম্যাকাডাম নির্মাণে ইটের কংক্রিটের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ বালু মিশানোর কথা। 

ঠিকাদার বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার অফিস বন্ধের সময়ে তড়িঘড়ি করে অধিক শ্রমিক নিয়োগ করে নিম্নমানের ইটের কংক্রিটের সঙ্গে প্রায় ৩০-৩৫ শতাংশ বালু ও মাটি মিশিয়ে কেশেরা গরু বাজার থেকে পরচঙ্গা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের ম্যাকাডাম নির্মাণ করে। সড়কে কাঁদা-মাটির স্তূপের মতো ইটের কংক্রিট মেশানো সামগ্রীর ছবি তুলে ও ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয় এলাকাবাসী।

এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, সংস্কারের অভাবে কালিয়ারচর থেকে কুটুম্বপুর সড়কে কয়েক ইউনিয়নের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সড়কটি সংস্কারে সরকার প্রায় ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও ঠিকাদার অসদুপায় অবলম্বন করে ১নং ইটের কংক্রিটের পরিবর্তে নিম্নমানের কংক্রিট, বালুর পরিবর্তে মাটি এবং ইটভাটার রাবিস ফেলে সড়কটি পাকাকরণে ম্যাকাডাম নির্মাণ করছে। এতে সড়কের স্থায়িত্ব কমবে এবং ওই রাবিসের উপর বিটুমিনও ভালভাবে লাগবে না।

পরচঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আরিফ, কেশেরা গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সারা উপজেলার যতগুলো কাজ হয়েছে, তার অধিকাংশ কাজই বাগিয়ে নিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিম্নমানের কাজ করেছিলেন ঠিকাদার জালাল উদ্দিন কালা। এখনও সেই ঠিকাদার কাজ নিয়ে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে চলেছেন।

বুধবার (২৮ মে) সড়কটি সরেজমিন দেখতে গেলে ঠিকাদার জালাল উদ্দিন কালা জানান, আমি সিডিউল মোতাবেক শতভাগ কাজ করছি। এখানে কোনো সন্দেহ নাই। ইটের কংক্রিট, ইটের গুঁড়া ও বালু পানিতে মিশানোর কারণে এর রং এমন দেখা যায়। 

রাতে বা বন্ধের দিন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছাড়া কাজ করা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘তাতে কী হয়েছে, সমস্যা কি? আগামীতে আপনাদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করব।’

একপর্যায়ে তিনি সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করার সুরে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আপনাদের অফিসে আসতেছি’।

চান্দিনা উপজেলা প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম জানান, সড়কের ম্যাকাডাম নির্মাণে ৫ শতাংশ বালু মিশানোর কথা থাকলেও অফিস বন্ধের সময়ে আমাদের উপসহকারী প্রকৌশলীদের অনুপস্থিতিতে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছেমতো অধিক পরিমাণ বালু মিশিয়ে কাজটি করেছে। আমরা সরেজমিনে গিয়েও প্রমাণ পেয়েছি। বর্তমানে আমাদের লোকজনের উপস্থিতিতে এবং কোনো প্রকার বালু মেশানো ছাড়াই কাজ চলছে। যেখানে সমস্যা আছে সেগুলো আমরা সিডিউল মোতাবেক বুঝে নেব।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম