‘ভূতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিলে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা
মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা পৌরসভার বাসিন্দা রুহুল। পৌরসভা এলাকায় মোটরসাইকেল গ্যারেজ রয়েছে তার। ওই গ্যারেজে চলে একটি মোটর, একটি ফ্যান ও দুটি বাতি। গ্যারেজটিতে গত মার্চ মাসে বৈদ্যুতিক বিল আসে ২৮৯ টাকা। এপ্রিলে আসে ৩৩৭ টাকা। কিন্তু মে মাসে গ্যারেজটির বিল এসেছে এপ্রিল থেকে তিনগুণেরও বেশি। মাসটিতে বিল এসেছে এক হাজার ১৯৫ টাকা। এ নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন এ গ্যারেজ মালিক।
রুহুল বলেন, ‘বিল বেশি আসার কারণে একবার মিটার পরিবর্তন করেছি। তবুও
সেই আগের অবস্থায় রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা ছেড়ে দিতে হবে।’
একই অবস্থা উপজেলার পাড়াটঙ্গীর বাসিন্দা লুৎফর রহমানের। তিনি বলেন,
‘ফেব্রয়ারিতে বিল আসছিল দুই হাজার ২৯৯ টাকা। মার্চে দুই হাজার ৪৬৪ টাকা। এপ্রিলে আবারও
দুই হাজার ২৯৯ টাকা। আর মে মাসে এসেছে চার হাজার ২৪৯ টাকা। কীভাবে কি হবে এমন হলে?
এর প্রতিকার কিভাবে হবে?’
সামিউল নামের মুক্তাগাছার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আগে নিয়মিত বিল যেখানে
চর থেকে পাঁচশ টাকা আসতো। সেখানে হঠাৎ করে বিল হয়ে যাচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা।
এটা তো মগের মুল্লুক মনে হচ্ছে।’
বিদ্যুৎ বিল নিয়ে শুধু রুহুল, লুৎফর বা সামিউল অভিযোগ করেননি। তাদের
মতো কয়েকশ গ্রাহক বিদ্যুতের বিল নিয়ে অসন্তুষ্ট। তাদের দাবি, নিম্নমানের বৈদ্যুতিক
মিটারের জন্য বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এপ্রিলে ব্যাপক পরিমাণে লোডশেডিং হয়েছে। তারপরও কীভাবে
এতে বিল আসছে তা তাদের বোধগম্য হচ্ছে না। এমনকি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দিয়েও সুরাহা
পাচ্ছে না তারা।
বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার জন্য মিটার রির্ডারকেও দোষারোপ করছেন ভুক্তভোগীরা।
তাদের দাবি, মিটার রির্ডারের মনগড়া ইউনিট লেখায় বিল বেশি আসছে।
জানা গেছে, প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক বিলের অভিযোগ নিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ
অফিসে যাচ্ছেন। ভূতুড়ে বিলে নিয়ে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা। অফিসের
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের মতো করে গ্রাহককে বুঝাচ্ছেন। তাদের কথা
বুঝলে ভালো,না বুঝলে কিছুই করার নেই বলে ভুক্তভোগীদের বিদায় দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে প্রায়শ
গ্রাহকের সঙ্গে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাগবিতণ্ডা হচ্ছে।
সাব্বির খান নামে একজন বলেন, ‘ফেব্রয়ারিতে বিদ্যুৎ বিল এসেছিল ৮১৯ টাকা,মার্চে
৪৫৪ টাকা। আমাদের এলাকায় রেকর্ড পরিমাণের লোডশেডিং ছিল। অথচ, মে মাসে বিদ্যুৎ বিল অস্বাভাবিক
তিন হাজার ৩৩৯ টাকা এসেছে। কারেন্টই যেখানে ঠিকমত থাকে না, সেখানে এমন ভূতুড়ে বিল কীভাবে
হয়।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার মো.শহীদ
উদ্দিন বলেন, ‘গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন সেভাবেই বিলও তৈরি হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত বিল নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মৌখিকভাবে বেশকিছু অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে
খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
