
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার দুটি গুচ্ছগ্রাম-গোমড়া ও কান্দুলীর বাসিন্দারা এবার কুরবানির মাংস দিয়ে ভাত খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেন। কুরবানির মাংস পেয়ে তাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক দেখা গেছে।
উপজেলা প্রশাসন ও বেসরকারি সংস্থার আয়োজনে কুরবানির মাংস পেলেন বঞ্চিত পরিবারের সদস্যরা।
জানা গেছে, গোমড়া গুচ্ছগ্রামে এক যুগ এবং কান্দুলী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা ৬ বছর ধরে কুরবানির মাংস পাননি। এবার বিভিন্ন মিডিয়ায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের উদ্যোগে দুটি গ্রামের মানুষ কুরবানির মাংস পেল।
গোমড়া গুচ্ছগ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা আঙ্গুরী বেগম (৭০) বলেন, ১২ বছর ধরে আমরা কুরবানির মাংসের স্বাদ পাইনি। এবার রক্তসৈনিক ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য গরু দিয়েছে। তাদের জন্য আমরা মন থেকে দোয়া করি।
গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী জানান, আমাদের এলাকার অনেক গরিব মানুষ আছেন, যারা কুরবানি দিতে পারেন না। এ উদ্যোগ আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। আমরা সংগঠনটির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, গুচ্ছগ্রামের দুস্থ মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে কুরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে সবাইকে কুরবানির মাংসের আওতায় আনার চেষ্টা করব। আমাদের বিভাগীয় কমিশনার স্যারও মাংস পাঠিয়েছেন। সেই মাংস ঈদের পরদিন অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করেছি। যদি কোনো অসহায় মানুষ কুরবানির মাংস না পেয়ে থাকেন, আমরা নিশ্চিত করব যেন তারা মাংস পান।
বিভিন্ন মিডিয়ায় এ খবর প্রকাশের পর রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি বিষয়টি নজরে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি গরু কুরবানির ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে কান্দুলী গুচ্ছগ্রামে শাহ অলি উল্লাহ ইসলাম সেন্টার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে এবং অরফান শেল্টার ফাউন্ডেশন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক সহায়তায় একটি গরু কুরবানি দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, ৬ বছর ধরে এ গ্রামে কুরবানির মাংস বণ্টন হয়নি। এবার দাতাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসী মাংস পেয়ে আনন্দে আত্মহারা।
এ উদ্যোগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর প্রায় প্রতিটি পরিবার এক একটি ভাগে প্রায় সাড়ে তিন কেজির মত মাংস পেয়েছে। কুরবানির মাংস পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আনন্দিত।
স্থানীয়রা আশা করেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন কুরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়। সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকবো।