স্বামীর বিরুদ্ধে কিশোরী স্ত্রীকে নির্যাতন ও চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম

ছবি : যুগান্তর
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে কিশোরী স্ত্রীকে নির্যাতন ও চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভুক্তভোগীর স্বামীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, প্রবাস ফেরত বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকা এনে না দেওয়া এমনটা করেছেন তার স্বামী।
ভুক্তভোগী সামিয়া আক্তার (১৮) উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের
প্রবাস ফেরত আবদুল গনি বেপারীর মেয়ে।
গত ৩১ মে রাতে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজারের চমকাবাজার
এলাকায় হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন
ওই গৃহবধূ, তার দাদি ও এক প্রতিবেশী এ প্রতিবেদকে বিষয়টি জানান।
জানা গেছে, নির্যাতন ও চুল কাটার বিষয়টি ওই গৃহবধূ তার বাবাকে জানালে
পুলিশের সহযোগিতায় সামিয়াকে উদ্ধার করা হয়। পরে অভিযুক্ত স্বামী এ বাবা-মেয়েকে ভয়ভীতি
দেখায়। এর জেরে ১২ দিন মেয়ে গোপনে রাখেন প্রবাস ফেরত বাবা আব্দুল গনি।
অভিযুক্ত স্বামী হত্যা মামলার আসামি অটোরিকশাচালক সাহাবুদ্দিন হাওলাদার
(৩০) চমকাবাজার এলাকায় হাওলাদার বাড়ি মৃত হযরত আলীর ছেলে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী,
শাশুড়ি জাহানারা ও ননদ আসমা বেগম পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী জানান, প্রায় এক বছর আগে সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
বিয়ের দুই থেকে তিন মাস ভালোই কেটেছে তাদের
দাম্পত্য জীবন। এরপর থেকেই শুরু হয় স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন।
গত ৭ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট
ও চরবংশী গ্রামে বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ ও কৃষকদল নেতা শামিম গাজির অনুসারীদের মধ্যে
দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে শামিম গাজির অনুসারী সাবেক যুবদল নেতা স্পেন প্রবাসী সাইজুদ্দিন
মারা যান। আহত হন অন্তত ১৫ জন। এর জেরে দুপক্ষের ১৫ নেতাকর্মীদের বসতঘরে হামলা, লুটপাট
ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় উভয়ের পক্ষ থেকে রায়পুর থানায় পৃথক পৃথক হত্যা মামলা করা হয়েছে।
সাইজুদ্দিন হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে র্যাব।
অভিযুক্ত স্বামী সাহাবুদ্দিন ফারুক কবিরাজের সমর্থক। স্পেন প্রবাসী সাবেক
যুবদল নেতা সাইজুদ্দিনের হত্যা মামলার আসামিও তিনি। এ মামলা থেকে বাঁচতে প্রবাস ফেরত
শ্বশুরের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করেছেন সাহাবুদ্দিন। আরও এক লাখ টাকা দিতে গত
৩১ মে শারীরিক নির্যাতন করে সামিয়ার মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কিশোরী বধূ সামিয়ার শাশুড়ি জাহানারা বলেন,
‘আমি বৃদ্ধ মানুষ। আমার ছেলে ও মেয়ে মিলে গৃহবধু সামিয়ার উপর অমাণবিক নির্যাতন করে।
আমি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকেও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হতে হয়। এ কারণে তাদের অন্যায়
অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারিনি।’
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নাই। খোঁজ
নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’