|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২৯ বছরেও হদিস মেলেনি হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমার। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিউ লাইল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার হন নারীবাদী এ মানবাধিকার কর্মী। ঘটনাটি বাংলাদেশসহ বহির্বিশ্বে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে। এর প্রতিবাদে গড়ে ওঠে বিক্ষোভ ও আন্দোলন, যা আজও অব্যাহতভাবে চলছে।
এদিকে কল্পনার অপহরণ ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর তৎকালীন কয়েক সদস্যকে দায়ী করে আসছিল তার পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ ঘটনায় মামলার তদন্তে আজ পর্যন্ত অপহৃতার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পরদিন কল্পনা চাকমার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা বাদী হয়ে বাঘাইছড়ি থানায় অপহরণের মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন বিচারিক কাজ ঝুলে থাকার পর ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। এর আগে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বাদী নারাজি আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন আদালত।
জানা গেছে, কল্পনা চাকমা অপহৃত হওয়ার পর দেশে-বিদেশে ব্যাপক জনমত ও আন্দোলন গড়ে উঠলে তার চাপে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১৯৯৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সরকার অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আব্দুল জলিলকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বাধ্য হয়। পাশাপাশি সরকার পুলিশ বিভাগের মাধ্যমেও তদন্ত পরিচালনা করে।
২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি রাঙামাটির চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় সিআইডি। এতে নারাজি আবেদন দেন মামলার বাদী।
পরে ১৬ জানুয়ারি শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা সিআইডির রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা প্রত্যাখ্যান করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশ চাইলে এতে সিআইডির প্রতিবেদন নিয়ে উপযুক্ত আদেশ দেন আদালত।
এরপর ২০১৬ সালে আদালত রাঙামাটির তৎকালীন পুলিশ সুপার তারিকুল হাসানকে এ মামলার তদন্তভার দেন। তিনি দুই বছর পর ২০১৮ সালে কারও বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ার তথ্য জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন। তবে এতেও নারাজি দিয়েছিলেন কল্পনার ভাই বাদী কালিন্দী কুমার। এর সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল বাদীর নারাজি আপত্তি খারিজ করে দেন আদালত।
এদিকে কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৯ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে ১০ জুন বাঘাইছড়ির সাজেকে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি অমিতা চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরানি চাকমা, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি এন্টি চাকমা, বাঘাইছড়ি উপজেলা সভাপতি সুখী চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক ঝিমিত চাকমা ও বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি জ্যোতি চাকমা, সাজেক কার্বারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নতুন জয় চাকমা।
