Logo
Logo
×

সারাদেশ

বৃষ্টির ছোঁয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস

Icon

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১০:৫০ পিএম

বৃষ্টির ছোঁয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস

দীর্ঘ এক মাসের খরতাপ আর প্রচণ্ড দাবদাহে হাঁসফাঁস করছিল উত্তর জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। রাস্তার পাশের গাছগুলো বিবর্ণ, ফসলের মাঠে হাহাকার, মানুষ-প্রকৃতি—সব যেন দাবদাহে পুড়ছিল।

এমন সময় বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করেই আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। এরপর নামে মুষলধারে বৃষ্টি। হু-হু করে নেমে আসে স্বস্তির পরশ।

এ বৃষ্টিতে শুধু ভিজে ওঠেনি ঠাকুরগাঁওয়ের সড়ক ও জনপদ, জেগে ওঠেছে কৃষকের মুখেও হাসি।

সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নসিরুল আলম বলেন, গত কয়েক সপ্তাহের খরায় কৃষিকাজ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে আমন মৌসুমের জন্য বীজতলা তৈরির সময় চলে যাচ্ছিল। এই বৃষ্টি সেই কাজ এগিয়ে নিতে বড় সহায়ক হবে। খরায় শুষ্ক হয়ে যাওয়া জমিতে ফের দেখা দিয়েছে প্রাণের আশা।

বালিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। গরমে কাজ করাই যাচ্ছিল না। আল্লাহর রহমত ছাড়া আর কিছু নয় এই বৃষ্টি।

বালিয়াডাঙ্গীর কৃষক মনোয়ার হোসেনও মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেন, জমি চাষের জন্য এখনই সঠিক সময়। কয়েক দিন যদি এমনটা থাকে, তাহলে আমনের বীজ বপন শুরু করতে পারব।

শুধু কৃষকই নন, স্বস্তি পেয়েছেন শহরের সাধারণ মানুষও।

ঠাকুরগাঁও শহরের রিকশাচালক মুকুল রানা বলেন, এই কয়দিন তো রিকশা চালানোই যায়নি, মনে হতো শরীর পুড়ে যাচ্ছে। আজকের বৃষ্টিতে মনে হলো প্রাণ ফিরে পেয়েছি।

দিনমজুর হাসিনা খাতুন বলেন, বৃষ্টিতে ভিজেছি ঠিকই, কিন্তু মনে হয়েছে শরীরটা ঠাণ্ডা হলো। অনেক দিন পর এই শান্তি পেলাম।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক  চিকিৎসক ডা. রকিবুল আলম চয়ন বলেন, গত কয়েক দিনে প্রচণ্ড গরমে অনেক রোগী এসেছেন। ডায়রিয়া, হিট স্ট্রোক, মাথা ঘোরা এসব সমস্যা বেশি দেখা গেছে। বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি দিলেও এখনই অসতর্ক হলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে যায়। তাই সবাইকে প্রচুর পানি পান এবং রোদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।

তবে জেলা আবহাওয়া অফিসে বৃষ্টিপাত মাপার যন্ত্র না থাকায় কত মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে—তা নির্ভুলভাবে বলা যায়নি। তবুও শহর থেকে গ্রাম, কৃষক থেকে চিকিৎসক—সবাই বলছেন একই কথা- এই বৃষ্টি যেন থাকে আরও কিছুদিন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম