সুদের টাকা না পেয়ে গাছে বেঁধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা না পেয়ে এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৫ জুন) দুপুরে খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম নূর আমিন (৩৮)। তিনি শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়; কিন্তু তার আগেই স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান করা হয় বলে স্থানীয়রা জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের জলিল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে সুদে এক লাখ টাকা নেন নূর আমিন। সুদের টাকা কয়েক মাস নিয়মিত দিয়েছিলেন তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হওয়ায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও হয়।
একপর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে নূর আমিনের একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন জলিল। গত এক বছর ধরে মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। সম্প্রতি সুদের টাকার জন্য নুর আমিনকে আবার চাপ দেন জলিল। এর জেরে রোববার তাকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী নূর আমিন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নূর আমিন বলেন, সুদের টাকা বাকি থাকায় আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জলিল নিয়ে গেছে। সে সময় বলেছিল, তার আর কোনো দাবি নাই; কিন্তু এখন আবার টাকা দাবি করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, আমি তার কাছে অনেক দিন ধরে টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তাকে আমি কোনো মারধর করি নাই। আমি নিয়ে আসার পরে তাকে বাড়িতে স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে দিয়েছিলাম। পরে তাকে যখন আটকাতে পারতেছি না, তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতারা আমাকে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।
ঘটনার ব্যাপারে খড়িয়া কাজীরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন, আমি ঘটনা শোনার পর আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি নূর আমিন বাঁধা অবস্থায় আছে এবং বাড়িতে প্রায় শতাধিক মানুষ ভিড় করেছেন। আমি তাদের বলি এভাবে মানুষ আটকে রাখা যাবে না। পরে আমি উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুইপক্ষকে সম্মত করি। তবে বেঁধে রাখার ঘটনায় জলিলকে সামাজিকভাবে তিরস্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, গাছে বেঁধে রাখার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছে বাঁধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। তাদের কোনো অভিযোগ থাকলে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
