জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিএনপি নেতার জিডি
যুগান্তর প্রতিবেদন, সোনারগাঁ (নারায়ণঞ্জ)
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. সেলিম মিঞা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই জিডি করেন সেলিম।
ভুক্তভোগীর দাবি, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের তিন সন্ত্রাসী তার কাছে চাঁদা চেয়েছে। এছাড়া ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সম্প্রচার মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় তারা তাকে অনবরত হত্যার হুমিক দিচ্ছে।
বিএনপি নেতা সেলিম বলেন, ‘সন্ত্রাসী নুরা পাগলা, তার ভাই হাবু ও তাদের সহযোগী সন্ত্রাসী ফালাইন্না আমার কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছিল। দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ও একটি টিভি চ্যানেলে এলাকার ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় নুরা পাগলা আমাকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মোবাইল ফোন নাম্বার থেকে হত্যা ও গুম করার হুমকি দিয়ে আসছে। এ ঘটনায় আমি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সোনারগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নুরা ডাকাতের পুরো পরিবার এলাকার ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী।
ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক কারবার, হামলা, বোমাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা
করাই এদের প্রধান কাজ। প্রতিদিন সন্ত্রাসী নুরা, হাবু ও ফেলাইন্নার নেতৃত্বে ২০ থেকে
২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব
কায়েম করে চলছে।’
অভিযোগের বিষয়ে নূরা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এলাকার কিছু মানুষ মিথ্যা
অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল মান্দারপাড়া
এলাকার তিন শীর্ষ সন্ত্রাসীর অত্যাচারে ২০ গ্রামের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
এ তিন সন্ত্রাসী বাহিনীর চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক কারবার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, বোমাবাজি
ও মারধরসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে এলাকার মানুষেরা আতঙ্কে থাকে। বিগত ১৭ বছর যাবৎ এ
তিন সন্ত্রাসী ও তাদের বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময় অনেক সাধারণ মানুষ হামলার শিকার হয়েছে।
কেউ মুখ খুললেই তাকে কুপিয়ে আহত করেছে। বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের
গ্রেফতার করলেও জামিনে এসে পুনরায় তাদের অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে। এ তিনজনের বিরুদ্ধে
সোনারগাঁ ও আড়াইহাজার থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি
ও মাদকসহ প্রায় দেড় ডজন মামলা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, দুর্ধর্ষ ডাকাত সর্দার
নুরা পাগলা এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও বোমাবাজি অব্যাহত রাখার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীর সদস্যরা তার নাম সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এ ঘটনার পর গ্রেফতার ও
ক্রসফায়ারের ভয়ে ২০২২ সালে গোপনে তিনি পালিয়ে মালয়েশিয়া চলে যায়। গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী
সরকারের পতনের পর নভেম্বর মাসে তিনি আবারও দেশে ফিরে আসে। দেশে ফিরেই পুনরায় তার সন্ত্রাসী
বাহিনীকে সক্রিয় করে তোলে।
মসলেন্দপুর গ্রামের আশিকুর রহমান বলেন, বছরের পর বছর ধরে এ অঞ্চলের ২০
গ্রামের সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের গ্রেফতার করে
আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, মান্দারপাড়া গ্রামের
ডাকাত নুরা পাগলা, তার ভাই হাবু ও ফালাইন্নার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ প্রায়
দেড় ডজন মামলা রয়েছে। বর্তমানে তারা এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে
আসছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তাদেরকে গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশ ইতোমধ্যেই কাজ শুরু
করেছে।
