উত্তাল সাগরে ঝুঁকি নিয়ে ইলিশ খুঁজে জেলেরা হতাশ
শিপুফরাজী, চরফ্যাশন
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে বর্ষা মৌসুমেও মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর অভয়াশ্রমে পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। নদীপাড়ের আড়তগুলোতে নেই চিরচেনা সেই হাঁকডাক। ফলে হতাশায় দিন কাটছে আড়তদার ও এনজিও থেকে ঋণ নেওয়া জেলেদের।
এদিকে নদীতে ইলিশের সংকট দেখা দেওয়ার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারগুলোতে। সরবরাহ না থাকায় ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। ট্রলার নিয়ে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী চষে বেড়াচ্ছেন জেলেরা। ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জাল ফেলেও পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। এতে করে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীর পাড়ের জেলেরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত এবং কতটা অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে তা ভাবতে অবাক লাগে।
চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী নতুন সুলিজ ঘাট, সাম্রাজ মাছঘাট এলাকার একাধিক জেলে, পল্লী থেকে প্রতিদিন দলবদ্ধভাবে জেলেরা নদীতে গিয়েও খালি হাতে ফিরছেন। নদীতে গিয়ে জেলেরা যে পরিমাণ ইলিশ পাচ্ছেন তা দিয়ে তাদের নৌযানের জালানি খরচ হচ্ছে না। ফলে জেলেদের দৈনন্দিন সাংসারিক খরচ মিটাতে গিয়ে নতুন করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়তে হচ্ছে।
জেলেরা জানান, নদীতে গিয়েছেন তিন দিন আগে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে। কিন্তু মাছ বিক্রি করে পেয়েছেন মাত্র ৫০ হাজার টাকা। এরপর আর নদীতে গিয়ে মাছ পাননি। নদীতে এখন মাছ নেই বললেই চলে। এ সময় আগের যেই পরিমাণ মাছ পাওয়া যেত এখন আর তা পাওয়া যায় না।
সাম্রাজ মাঝ ঘাটের বরফ মিলের ম্যানেজার কবির হোসেন জানান, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার আশায় প্রতিদিন এই ঘাট থেকেই নৌকা ট্রলার নিয়ে জেলেরা নদী, সাগরে যাচ্ছেন; কিন্তু তারা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরছেন তীরে। নদীতে মাছ নেই, আড়ৎদারদের ব্যবসা নেই, চরম বিপাকে আছে চরফ্যাশনের উপকূলীয় এলাকার জেলেরা।
এছাড়াও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তন, উজানে পাহাড়ি ঢল না থাকায় এখনো কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে না। উপকূলীয় এই নদ-নদীগুলোতে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস ইলিশের জন্য ভরা মৌসুম।
চরফ্যাশন উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ জানিয়েছেন, বর্তমানে নদীতে জেলে ও নৌযান বেশি থাকা, তাছাড়া সময় অসময় চাহিদার বেশি মাছ শিকার করাসহ জলবাযু পরিবর্তনের কারণে এই মৌসুমে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে আমরা প্রতিবছরই নদীতে বিভিন্ন সময় অবরোধ দিয়ে থাকি। সেই সময় আমরা জেলেদের চাল গবাদি পশু দিয়ে সহায়তা করে থাকি। পাশাপাশি নদীতে অবৈধভাবে চলাচলকারী নৌযানকে আমরা নিবন্ধনের আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
