|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নোয়াখালীর হাতিয়ায় যাত্রীবাহী একটি স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার হরনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট থেকে ছেড়ে আসা স্পিডবোটটি বৌ-বাজারসংলগ্ন মেঘনা নদীর জলসীমায় ডুবে যায়।
তবে স্থানীয়দের দ্রুত ও সাহসী তৎপরতায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও স্পিডবোটে থাকা ২৮ জন যাত্রীকেই জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবারও চেয়ারম্যান ঘাট থেকে যাত্রীবোঝাই স্পিডবোটটি নলচিরার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। পথিমধ্যে বৌ-বাজার এলাকার মেঘনা নদীতে পৌঁছলে হঠাৎ বোটটির নিচ দিয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে বোটটির ভারসাম্য হারিয়ে তা ডুবে যেতে থাকে।
এ সময় যাত্রীদের আতঙ্কিত চিৎকারে আশপাশের জেলে ও স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। তাদের তৎপরতায় সবার জীবন রক্ষা সম্ভব হয়।
জীবিত উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের একজন পল্লী চিকিৎসক ফয়সাল জানান, স্পিডবোটটিতে ২৭ জন যাত্রী থাকার কথা থাকলেও চালক অতিরিক্ত যাত্রী তুলছিলেন। আমাদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি তা উপেক্ষা করেন। অতিরিক্ত বোঝার কারণে পানির চাপ বেড়ে বোটে পানি ঢুকে পড়ে এবং ডুবে যেতে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, ভাগ্যক্রমে সবাই সাঁতরে অথবা স্থানীয়দের সহযোগিতায় নিরাপদে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছে। একটু দেরি হলেই প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল।
ঘটনার বিষয়ে নলচিরা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আশিষ চন্দ্র সাহা বলেন, স্পিডবোটটি নদীর তীরের কাছাকাছি এসেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রী ও চালকসহ সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, প্রায়শই স্পিডবোটগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয় এবং কোনো ধরনের নিরাপত্তাবিধি মানা হয় না। চালকদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, আর প্রশাসনের নজরদারি অত্যন্ত দুর্বল।
তারা এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত নজরদারি, যাত্রীসংখ্যার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রাথমিক তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও নিরাপত্তাবিধি লঙ্ঘনের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সামগ্রিকভাবে ঘটনাটি বড় ধরনের ট্র্যাজেডিতে রূপ নিতে পারত। স্থানীয়দের সাহসিকতা ও তাৎক্ষণিক উদ্যোগ প্রাণহানি থেকে রক্ষা করেছে ২৮টি জীবন। তবে এটি সতর্কবার্তা—নৌযান চলাচলে অব্যবস্থাপনা ও অবহেলা আর কতদিন চলবে?
