শিক্ষকের পেনশন আটকে থাকায় অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসা বন্ধ
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নিভৃত এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জালাল উদ্দিন চাকরি করছিলেন এমপিওভুক্ত দাখিল মাদ্রাসায়। এরই মধ্যে তার ছেলে ইয়াহিয়া সরকার (২৮) জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এ ছেলের চিকিৎসাসেবায় নিঃস্ব হয়ে যায় পরিবারটি। ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে তোর হার্টের দুইটি ভাল্ব। তাকে সুস্থ করে তুলতে এখন ৪ লাখের বেশি টাকা দরকার। এদিকে তার পেনশনের টাকাও তুলতে পারছেন না। ফলে বন্ধ রয়েছে ছেলের সুচিকিৎসা। এখন বাবার চোখের সামনেই মৃত্যুর প্রহর গুনছেন ছেলে ইয়াহিয়া।
সোমবার দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর (দক্ষিণপাড়া) গ্রামে দেখা গেছে, জালাল উদ্দিনের পরিবারে অসহায়ত্বের দৃশ্য। রোগাক্রান্ত ইয়াহিয়াসহ সবার মলিন মুখ। চরম হতাশার চোখে তাকিয়ে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাদুল্লাপুরের চকশালাইপুর দাখিল মাদরাসায় জুনিয়র শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেন জালাল উদ্দিন। স্ত্রীসহ দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার ৬ সদস্যের পরিবার। চাকরিরত অবস্থায় যেটুকু বেতন-ভাতা পেতেন তা খেয়ে-পড়েই শেষ। নেই কোনো গচ্ছিত টাকা কিংবা সহায় সম্পদ।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন জালাল উদ্দিন। কল্যাণ ট্রাস্ট ও পেনশনের টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এরই মধ্যে তার ছেলে ইয়াহিয়া সরকার জটিল রোগে আক্রান্ত। তার ওষুধের টাকা জোগাড় করতে বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে শিক্ষক জালাল উদ্দিনকে। বিভিন্নভাবে ঋণ করে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে।
এরপর ঢাকার উত্তরায় কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া হয়। এখানকার চিকিৎসক ডা. ইব্রাহীম জানিয়েছেন ইয়াহিয়ার দুইটি ভাল্ব নষ্ট হয়েছে। তার উন্নতি চিকিৎসা জরুরি।
এতে মোটা অংকের টাকা ব্যয় করতে হবে। ইতোমধ্যে এ ছেলেকে সুস্থ করার চেষ্টায় একেবারে নিঃস্ব হয়েছে পরিবারটি। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ছেলেকে বাঁচাতে দানশীল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চাচ্ছেন ইয়াহিয়ার বাবা-মা।
চকশালাইপুর দাখিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত জুনিয়র শিক্ষক ও ভুক্তভোগী জালাল উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে ইয়াহিয়া সরকার এখন মূমুর্ষ অবস্থায় বাড়িতে শয্যাশায়ী। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। এছাড়া এক মেয়েকে পাত্রস্থ করানোর পর তার উপহার সামগ্রীও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি পেনশনের টাকাও আটকে আছে। যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ছেলেকে সুস্থ করতে মানবিক ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি।
