ফরম পূরণের টাকা আত্মসাৎ
উল্লাপাড়ায় এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না তিন শিক্ষার্থীর
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ০৯:৪৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
একজন ল্যাব সহকারীর দুর্নীতি ও প্রতারণার কারণে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলতি বছরের এইচএসসির বিএমটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারল না তিন পরীক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসা ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরীক্ষাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা হলো- উপজেলার পূর্ব দেলুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কাওসার আলী, একই গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে রাজু আহমেদ, হাবিবগঞ্জ গ্রামের শাহদৎ হোসেনের ছেলে সাকিবুল হাসান। এরা সবাই এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিউম্যান রিসোর্স ট্রেডের শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রচলিত নিমানুযায়ী এটি ছিল তাদের প্রথম বর্ষ সমাপনী পরীক্ষা।
বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তারা যথাসময়ে উল্লাপাড়া মার্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএম শাখায় ভর্তি হন। প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুযায়ী তারা অভ্যন্তরীণ সব পরীক্ষাও দিয়েছেন। প্রথম বর্ষ সমাপনীর বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য তারা ২৬০০ টাকা করে এ প্রতিষ্ঠানের ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের কাছে জমা দেন; কিন্তু রাজু ফরম পূরণ না করে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন।
বুধবার (২৫ জুন) পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে গেলে তারা জানাতে পারেন তাদের ফরম পূরণ হয়নি, প্রবেশপত্রও আসেনি।
প্রবেশপত্র কেন আসেনি? জানতে চাইলে তাদের আশ্বস্ত করে রাজু আহমেদ বলেন, পরীক্ষার আগে যথাসময়ে তাদের প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হবে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার দিন গিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন তাদের ফরম পূরণই হয়নি এবং রাজু আহমেদও পলাতক।
অভিযোগকারীরা জানান, ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান ও স্কুলের সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাতের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে এ প্রতারণা এবং তাদের শিক্ষাজীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাওয়ার জন্য রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লাপাড়া মর্চেন্টস পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মীর আব্দুল হান্নান জানান, বিষয়টি তাকে আগে জানানো হয়নি। বর্তমানে রাজু আহমেদ পলাতক রয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক বলেন, তার ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদ এর আগেও স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার কথা বলে অনেক অভিভাবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন; কিন্তু ভর্তি করে দিতে পারেননি। বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর তার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি স্থগিত করা হয়। এ বছর আবারও দুর্নীতি ও প্রতারণার দায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের সভাপতিকে অনুরোধ করেছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, কথিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি দ্রুত বিষয়টির তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছেন। প্রথমিকভাবে ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ল্যাব সহকারী রাজু আহমেদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
