উদ্দেশ্য জমি দখল
দুই সহোদরের এনআইডি বাতিলের অভিযোগ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ০৪:৩০ এএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার খারিজা ভাজনী গ্রামে জমি দখল নিতে সংখ্যালঘু পরিবারের দুই ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিলের চক্রান্ত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। ভূমিদস্যুদের অব্যাহত হুমকি-ধমকিতে তারা নিজ গ্রামে ফিরতে পারছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার (২৭ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার খারিজা ভাজনী গ্রামের ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান ও বজেন্দ্রনাথ রায় প্রধান নামের দুই সহোদর।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান জানান, পঞ্চগড়ের টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের খারিজা ভাজনী গ্রামে তাদের পৈতৃক ভিটা বাড়ি। তারা তিন ভাই ও এক বোন। তাদের বাবা জলধর রায় প্রধান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হিসাবে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিবারটি দীর্ঘকাল ধরে ওই এলাকায় বসবাস করে আসছে এবং স্থানীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ জনকল্যাণে জমি দান করেছেন।
ভবেন্দ্রনাথ বলেন, ‘আমরা পৈতৃক সম্পত্তি থেকে ২ দশমিক ৮৮ একর জমির ওপর ১৯৮১ সালে গাজুকাটি তফসিলি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি এবং আমি নিজেই দলিল করে তা বিদ্যালয়ের নামে দান করি। এছাড়া গাজুকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির ও বাজার প্রতিষ্ঠার জন্যও আমাদের পরিবার জমি দিয়েছে। তবে এসব জনহিতকর কাজে ভূমিদস্যুদের রোষানলে পড়েন তারা।’
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে আমার বাবা জলধর রায় প্রধানকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে পৈতৃক সম্পত্তি দখলের উদ্দেশে। ভবেন্দ্রনাথ জানান, হত্যার পেছনে ফিরোজ শেখ, চাঁন মিয়া, আনোয়ার হোসেন হরমুজ, আমির আলী গার্ড ও ময়েজ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় ভূমিদস্যু জড়িত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বাবার হত্যার পর আমরা প্রাণভয়ে এলাকা ছাড়ি। পরে ফিরে এলেও হত্যাকারীদের সন্তানরা আমাদের হুমকি দিয়ে যায়। এমনকি তারা আমাদের মৃত দেখিয়ে ভুয়া দলিল তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করে।’
তাদের অভিযোগ, স্থানীয় এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের ১৫ বছর তাদের নাগরিক সনদ ও জন্মনিবন্ধন প্রদান না করে ভূমিদস্যুদের পক্ষ নিয়েছেন। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী মাড়েয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিষয়টি অনুধাবন করে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সনদ প্রদান করেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পর ভূমিদস্যু স্থানীয় সন্ত্রাসী মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন চৌধুরী বাপ্পি ও তার সহযোগীরা কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে। সকল দলিল ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তা সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই ছাড়া অসাধু চক্রের মাধ্যমে এনআইডি প্রাথমিকভাবে স্থগিত করে।
ভবেন্দ্রনাথ রায় বলেন, আমরা গত ২৫ জুন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছি যাতে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমাদের পরিচয়পত্র পুনরায় সচল করা হয়। আমরা চাই আমাদের মৌলিক অধিকার ভোটাধিকার ও বসবাসের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তিনি তার বাবা হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন।
