দীর্ঘ ১৭ বছর পর টুঙ্গিপাড়া উপজেলা-পৌর বিএনপির সম্মেলন
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দীর্ঘ ১৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হবে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে উৎসবমুখর পরিবেশ। ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্বে রাখা হবে- এমনটাই প্রত্যাশা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।
আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সোমবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত হবে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন৷
টুঙ্গিপাড়া পৌর বাস টার্মিনাল মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ইতোমধ্যে গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে সম্মেলন স্থলে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী প্যান্ডেল। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনি এলাকায় সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে কিনা এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে রয়েছে শঙ্কা।
রোববার দুপুরে সম্মেলনস্থলে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটিই জানান স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপি একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিরোধী মতকে আমরা শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে এবং গণতন্ত্রের চর্চা করে। দীর্ঘ সময় আমরা রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। দেশের মধ্যে ভীতি রাজত্ব কায়েম করেছিল শাসকগোষ্ঠী। হরণ করা হয়েছিল বাকস্বাধীনতা ও ভোটের অধিকার।
এসএম জিলানী বলেন, আমরা গত ১৭ বছর যাবত এ অধিকার আদায়ের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এ আন্দোলন সংগ্রামের ফলশ্রুতিতে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। রাজনৈতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা ১ জুন কোটালীপাড়ায় সম্মেলন সুষ্ঠু সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছি। দীর্ঘ ১৭ বছর পর সোমবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা ইতোমধ্যে সম্মেলনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। টুঙ্গিপাড়ার নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসাহ উদ্দীপনা।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি এ সম্মেলনকে বানচাল করার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরেরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রশাসনের ব্যাপারে তৎপর রয়েছে। আশা করি আপনাদের সবার সার্বিক সহযোগিতায় সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে সোমবার অনুষ্ঠিত বিএনপির সম্মেলন সম্পন্ন করব। এ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপির নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে, যারা দলকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হয়ে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।
এ সম্মেলনকে সফল করতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন দলীয় নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে সভা সমাবেশ শেষ করেছেন।
এসএম জিলানী বলেন, এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন। বিশেষ অতিথি থাকবেন- সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ, ফরিদপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাসরুর হোসেন ও সেলিমুজ্জামান।
গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শরীফ রাফিকুউজ্জামান বলেন, টুঙ্গিপাড়া বাংলাদেশের মধ্যে একটি বিশেষ উপজেলা। সোমবার ওই উপজেলায় বিএনপির অধিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে ইতোমধ্যে আমি সম্মেলন স্থল পরিদর্শন করেছি। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের মাঝে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। আশা করি আগামীকাল বিএনপির এ দ্বিবার্ষিক সম্মেলন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানীর বাড়ি টুঙ্গিপাড়ায়। তাই সেখানে নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্মেলন সফল করার জন্য কাজ করছে।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল বিধায় গণতন্ত্রের প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন করা হবে বলে জানান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক।
