Logo
Logo
×

সারাদেশ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দুই ছাত্রের মৃত্যু

চট্টগ্রামে সাবেক চার মন্ত্রীসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৫, ১১:০২ পিএম

চট্টগ্রামে সাবেক চার মন্ত্রীসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক চার মন্ত্রীসহ ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঘটনার প্রায় এক বছর পর এসে মঙ্গলবার নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হলো। নিহতদের মধ্যে একজন বেসরকারি বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র। তার নাম কাউছার মাহমুদ। আরেকজন হচ্ছেন মাদ্রাসার ছাত্র। তার নাম নিজাম উদ্দিন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাউছার মাহমুদ নিহতের ঘটনায় তার বাবা আবদুল মোতালেব বাদী হয়ে মামলা করেন। এই মামলায়  সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে নিহত মাদ্রাসাছাত্র নিজাম উদ্দিনের বাবা সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে সাবেক মন্ত্রী. ড. হাছান মাহমুদ-নওফেলসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

কাউছার মাহমুদের (২২) বাড়ি  নগরীর ডবলমুরিং থানার মোগলটুলি এলাকায়। কাউছার চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটিবিবিএ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

নিজাম উদ্দিন (২১) নগরীর কোতোয়ালি থানার খলিফাপট্টি এলাকায়।  তিনি নগরীর বাকলিয়ার শান্তিনগর এলাকায় একটি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন বলে মামলার এজাহারে  উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে একটি মামলায় মৃত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকেও মামলার এজাহারে আসামি করা হয়েছে। আবার একই ব্যক্তির নাম এজাহারে একাধিকবার এসেছে।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুল করিম দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় তার থানায় দুটি মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে কাউছার মাহমুদের ওপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেন। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি গত ১৩ অক্টোবর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মাদ্রাসাছাত্র নিজাম নিহত হওয়ার বিষয়ে এজাহারে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট দুপুরে নগরীর লালদিঘীর পাড়ে ছাত্র-জনতার সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন নিজাম। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কাউছারের বাবার দায়ের করা মামলার উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, মহিউদ্দীন বাচ্চু ও আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর যথাক্রমে- হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, জহরলাল হাজারী, এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, জোবায়ের, বাহাদুর, আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের, জিয়াউল হক সুমন, গিয়াস উদ্দিন, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, আশরাফুল আলম, শহীদুল আলম ও আব্দুস সবুর লিটন প্রমুখ।

মামলার এজাহারে ঘটনার আগে মৃত দুই আওয়ামী লীগ নেতার নামও রয়েছে। এর মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক দেবাশীষ গুহ বুলবুল ২০২১ সালের ৫ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অমল মিত্র মারা গেছেন ২০২৩ সালের ৭ মার্চ।

এছাড়া মামলায় আসামির তালিকায় সাবেক কাউন্সিলর জহরলাল হাজারীর নাম তিনবার এবং গিয়াস উদ্দিন, মশিউর রহমান, দিদারুল আলম মাসুম, আজিজুর রহমান আজিজ, নুরুল  আজিম রনি, ইমরান আহমেদ ইমু ও জাকারিয়া দস্তগীরের নাম দুইবার করে উল্লেখ আছে।

এক বছর পর মামলা দায়েরের বিষয়ে উভয় মামলার বাদীদ্বয়  এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ওই ঘটনার বিস্তারিত অবগত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম