যুবলীগ নেতাকে ধরতে ঘেরাও নয়, পারিবারিক বিরোধে ‘মব’ তৈরি

রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম

ফলো করুন |
|
---|---|
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনিকে ধরার অভিযোগে আটতলা ভবন ঘেরাও করা হয়েছিল। তবে এটি ছিল একটি পারিবারিক বিরোধ। এর জের ধরেই ‘মব’ তৈরি করা হয়।
এ ঘটনায় রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান শিশিলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে শুক্রবার মামলা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার দুপুরে। পদ্মা পারিজাত এলাকার আটতলা ভবনটি ঘেরাও করেন স্থানীয় যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু নেতাকর্মী। ভবনটির মালিক জাবেদ আক্তার বেবী। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই কিছু লোক ভবনের উপরের তলায় উঠে তল্লাশি চালায়। তারা দাবি করতে থাকেন, ভবনটিতে লুকিয়ে আছেন নগর যুবলীগ নেতা রনি।
তবে সূত্র জানায়, রনি অনেক আগেই দেশ ছেড়ে গেছেন। অভিযানের খবর পেয়ে তিনি ফোন করেন জেলা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকোকে। বলেন, ‘এত কষ্ট করে লাভ নেই, আমি অনেক দূরে আছি। সময় হলে নিজেই ফিরে আসব।’ এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযানের সমাপ্তি ঘটায়।
ঘটনার পরদিন, ভবন মালিকের স্ত্রী হাবিবা আক্তার মুক্তা চন্দ্রিমা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। শুক্রবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়।
অভিযোগে তিনি বলেন, ভবনে ঢুকে ‘মব’ তৈরি করে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে এবং তার ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে ঢুকে লুটপাট চালানো হয়। বাসা থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা ও ১২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তার দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাহমুদ হাসান শিশিল ও জীবনসহ অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, বাড়ি ঘেরাও ও ভেতরে ঢুকে লুটপাটের অভিযোগে মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার বাদী হাবিবা বলেন, তার জামাতা মেহেদী হাসান সিজারের আপন ভাই শিশিল। পারিবারিক সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে। সন্দেহের ভিত্তিতে শ্বশুরবাড়ি ঘিরে মব তৈরি করে ভয় দেখান শিশিল। রনিকে ধরার বিষয়টি শুধু ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার প্রচেষ্টা।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে শিশিল বলেন, যুবলীগ নেতা রনিকে ধরতে অভিযান চলে, তখন সেখানে নেতাকর্মী ছাড়াও পুলিশ ও সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন। তখন কেন অভিযোগ তুলল না? দুই দিন পরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, আমার লুটপাটের কোনো প্রয়োজন নেই। আমার মান-সম্মান আছে।