জুলাই আন্দোলনে শহিদ সন্তানের কথা মনে করে কাঁদলেন রোজিনা

সেনবাগ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১:২৯ পিএম
-68680f76a35c5.jpg)
ফলো করুন |
|
---|---|
‘মা, আমি তিন মাস পরে আসব, গাজীর মেলায় যাব’- ছেলের এ কথাগুলো স্মরণ করে বলতে বলতে দু’চোখ ভরে জল গড়িয়ে পড়ছে জুলাই আন্দোলনে ঢাকার গুলিস্থানে নিহত কামাল উদ্দিন জিহাদের মা রোজিনা আক্তারের।
ছেলে এসেছে ঠিকই, তবে তিন মাস পরে নয়- তিন দিন পরেই এসেছে কফিনবন্দি হয়ে, চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে যাওয়ার জন্য। নিজের চোখের সামনে এভাবে তরতাজা সন্তান হারানো কিছুতেই মানতে পারেনি পরিবারসহ এলাকাবাসী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবু সাঈদ মারা যাওয়ায় তার মায়ের আহাজারি দেখে ছেলেকে সতর্ক করে রোজিনা আক্তার বলেছিলেন, ‘বাবা তুমি সতর্ক থাকিও’।
মায়ের মনে আশঙ্কা ছিল জিহাদেরও যদি এভাবে মৃত্যু হয়, তাহলে আমাদেরও তো সারা জীবন এভাবে কাঁদতে হবে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! মায়ের সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়ে গেল।
কামাল উদ্দিন জিহাদ নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের পলতি তারাবাড়ীয়া গ্রামের বড়বাড়ির কবিরের ছেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে জিহাদ সবার বড় ছিল।
মা রোজিনা আক্তার ও বাবা কবিরসহ এলাকাবাসী জানান, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই চাচাতো ভাই আসিফের সঙ্গে ঢাকায় এসে গুলিস্তানে একটি দোকানে চাকরি নেয়।
২০ জুলাই সন্ধ্যায় পুলিশের টিয়ারসেলে গুরুতর আহত হয়। সঙ্গে সঙ্গে লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২১ জুলাই পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে পেক্ষাপট বদলে যায়। সেই সময়ে প্রচার হওয়া বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে থেকে যাওয়ার কারণে মূল বিষয়টি আড়ালে থেকে চাপা পড়ে যায়। ছেলের নাম জুলাই আন্দোলনের শহীদের তালিকাভুক্তির জন্য নোয়াখালী জেলা প্রসাশক ও সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী বরাবর আবেদন করেন বাবা মো. কবির।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে নিহতের বিষয়ে উপজেলায় একটি কমিটি আছে। সেই কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত জেলায় পাঠানো হয়। জেলা কমিটির অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়।