নাসিরনগরে দুপক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত ৩০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০১:৩১ পিএম

প্রতীকী ছবি
ফলো করুন |
|
---|---|
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই গোষ্ঠীর লোকজন। শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের চাতলপাড় বাজারে হওয়া এ সংঘর্ষে সোহরাব হোসাইন আবির (২৭) নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। ভাঙচুর ও লুট করা হয় পাঁচ দোকানে।
নিহত সোহরাব চাতলপাড় ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দি গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কাঁঠালকান্দি গ্রামের বাসিন্দা চাতলপাড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীর গোষ্ঠী ও মোল্লা গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার সকালে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জেরে দুপুর ১টার দিকে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে মোল্লা গোষ্ঠীর সমর্থক ছাত্রদল নেতা সোহরাব মিয়া টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।
আহতদের মধ্যে নেয়ামুল মিয়া, বাবুল মিয়া, সুরাফ মিয়া, মোতাহার মিয়া, তালেব মিয়া, আশিক মিয়া, আলাউদ্দিন, ইউসুফ মিয়া, হাফিজ মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, দুরস মিয়া ও জলি মিয়ার নাম জানা গেছে।
আবির খুন হওয়ার পর মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন চাতলপাড় বাজারে প্রতিপক্ষের পাঁচটি দোকান ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন সুযোগ পেলেই আমাদের গোষ্ঠীর লোকদেরকে মারধোর করতো। এর জেরে চাতলপাড় বাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলার সময় মোল্লা গোষ্ঠীর লোকজন বাজারে থাকা আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটতরাজ করে।’
মোল্লা গোষ্ঠীর মোতাহার হোসেন বলেন, ‘অতর্কিত হামলা করলে দুপক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ চলাকালে তারা আমাদের গোষ্ঠীর সোহরাবকে টেঁটা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।’
চাতলপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। পুরানো বিরোধের জেরে দুপুরে চাতলপাড় বাজারে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে মোল্লা গোষ্ঠীর সোহবার নিহত ও উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।’
নাসিরনগর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জেরেই সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’