নরসিংদীর মেঘনা নদীর বালু সম্রাট হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম সরকারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে দলের সহ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থি অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম সরকারকে বিএনপি প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

স্থানীয়রা জানায়, কাইয়ুম নরসিংদী সদর উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের দিলালপুর মৌজায় বালু মহালের ইজারা নিলেও বরাবরই ইজারার সীমানা পাড় হয়ে আরও কয়েক কিলোমিটার দূরে আলোকবালী ইউনিয়নের নেকজানপুর ও গৌরিপুরার চর এলাকার মধ্যবর্তী স্থান থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন। 

তাছাড়া ইজারার শর্ত অনুযায়ী কাটিং ড্রেজার দিয়ে বালু কাটার কথা থাকলেও তিনি তা না করে প্রতিনিয়ত একাধারে ১৫ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু কাটেন। 

দীর্ঘদিন ধরে আলোকবালীর নেকজানপুর ও গৌরিপুরার চর এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে অবৈধ চুম্বক ড্রেজার বসিয়ে মেঘনা নদী থেকে অবাধে উত্তোলনের ফলে নদীর ভাঙনে এলাকাবাসীর ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যার ফলে ঘরহারা হয়েছে অনেক মানুষ। 

এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেই তার ক্যাডারবাহিনী দিয়ে নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালিয়েছে।  এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসী অভিযোগ জানিয়েছে।  

পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে আব্দুল কাইয়ুম স্থানীয়  সাংবাদিক আবুল কাশেমকে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ, হুমকি-ধমকিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন। 

স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আকরামুল ইসলাম সমির জানান, আব্দুল কাইয়ুম মেঘনায় অবৈধ বালু ব্যবসা করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তিনি এলাকায় আওয়ামী দোসর পূর্ণবাসনে নিয়োজিত রয়েছেন।  তার কারণে ত্যাগী বিএনপি কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। 

তার বিরুদ্ধে রাজ্জাক চেয়ারম্যান হত্যাসহ ৪টি হত্যা মামলা, অবৈধভাবে অন্যের জমি জবরদখল করে মাটি ভরাট করা, অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজির অভিযোগসহ বেশ কটি অভিযোগ রয়েছে। 

তার বহিষ্কারের খবরে আলোকবালীতে খুশির আমেজ বিরাজ করছে। তারা বালু খেকো কাইয়ুমের বহিষ্কারের খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছে। 

ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক শাহ আলম চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কঠোর হুঁশিয়ারী দিয়েছেন-দলের নাম ভাঙ্গিয়ে যারা অপকর্ম করবে তাদের দলে ঠাঁই হবে না। কাইয়ুমের এ বহিষ্কার দলের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসবে। ভবিষ্যতে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অপকর্ম করার সাহস পাবে না। তার এই বহিষ্কারে এলাকাবাসী খুশি হয়েছে। 

নরসিংদী জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মনিরুল হক জাবেদ বলেন, বহিষ্কার আদেশ আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেয়েছি। এ ব্যাপারে জেলা বিএনপি থেকে আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি।