মা-বাবা-স্বামীর বিরুদ্ধে নারীর সংবাদ সম্মেলন
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ০১:১০ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় মা, বাবা ও স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাফরিহা খাতুন নাইমা নামের এক নারী। শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাতে স্থানীয় সাপ্তাহিক কুষ্টিয়ার মুখ পত্রিকা অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী নাইমা ভেড়ামারা ডিগ্রী কলেজের বিএসএস প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
তিনি জানান, বাবা, মা ও স্বামীর হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি আশ্রয় নেন
বোন ও দুলাভাইয়ের সংসারে। এ আশ্রয় দেওয়াই যেন
কাল হয়েছে বোন আর দুলাভাইয়ের। ৫ বছর ধরেই মা,
বাবা ও স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ তিনি। নাইমাকে
কিডন্যাপ করার একাধিক প্ল্যান ভেস্তে যাওয়ার পর দুলাভাইকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে সেনাবাহিনী
দিয়ে হেনস্তা করার পথ বেছে নিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নাইমা বলেন, ‘আমার বাবা ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম
ইউনিয়ন কোদালিয়াপাড়া গ্রামের মো. আবু নেছার উদ্দীন নান্টু (৫২)। র্দীঘদিন ধরেই আমার
বাবা আমার ওপর শারিরিকভাবে ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। ২০১৯ নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে
জোরপূর্বকভাবে একজন বয়স্ক বখাটে লোকের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেয়। আমি ছিলাম তার তিন নম্বর
স্ত্রী। বাবার বয়সি ওই লোকের সঙ্গে সংসার করতে
রাজি না হলে, আমার ওপরে তাদের অমানবিক শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন নেমে আসে। অত্যাচারে আমি দিশেহারা ও নিরুপায় হয়ে একাধিকবার
পালানোর চেষ্টা করি। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে
তালাক দিয়ে পালিয়ে আসি বড় বোন রোকাইয়া খাতুন ও দুলাভাই মহন আলীর বাড়িতে।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা একজন মাজার ভক্ত মানুষ। সে চাইতো আমি মাজার
ভক্ত কোনো মানুষকে বিয়ে করে মাজার মাজার ঘুরে মানুষের সেবা করে বেড়াই। সেই লক্ষ্যেই
জোর করে বিয়ে দিয়েছিল। আমার মা-বাবা কখনোই আমার ভালো চাইনি। তারা লেখাপড়াও বন্ধ করে
দিয়েছিল। বোনের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর আমার সব দায়িত্ব নিয়েছে তারা।
এ নারীর অভিযোগ, পালিয়ে আসার পর বিভিন্ন সময় মা, বাবা ও স্বামী আমাকে
অপহরণ করা ছাড়াও নানা রকম ঝামেলা করেছিল। এ বিষয়ে একাধিকবার সালিশ হয়। ২০২০ সালের ১৩
নভেম্বর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সালিশের মাধ্যমে বোনের বাসায় থাকার অনুমতি দেয়।
এ বিষয়ে লিখিত চুক্তিপত্রও আছে। কিন্তু তারা আমার পিছু ছাড়েনি। উল্টো আমার কারণে আমার
বোন ও দুলাভাইকে হেনস্থা করে যাচ্ছে।
নাইমা বলেন, গত ৮ জুলাই দুপুরে আমার বোনের কাঠেরপুলস্থ কম্পিউটারেরর
দোকানে এসে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে নাইমার বড় বোন রোকাইয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘বাবার
অত্যাচারে আমরা দিশেহারা। গত ৫ বছর ধরেই আমাদের যন্ত্রণা দিয়ে আসছে। আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। তার
বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাকে সন্ত্রাসী বানানোর
অপচেষ্টা করেছে।
