নাসিরনগর-মাধবপুর সড়কে বড় বড় গর্ত
নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৫ পিএম
ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর-মাধবপুর সড়কের নানা অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙন আর খানাখন্দে ভরে গেছে। ফলে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নারী থেকে রোগীবাহী গাড়ি, কেউই স্বস্তিতে নেই। স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে সব বয়সি মানুষকে অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের তিন কিলোমিটার নির্মাণেই দুই বছর সময় লেগেছে। অথচ কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে আরও আগে। বিপজ্জনক এ সড়কে প্রতিদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে আহত হচ্ছেন শিশু-নারী, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নাসিরনগর-মাধবপুর আঞ্চলিক সড়কের ৯ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর খরচ ধরা হয় ১৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাসান এন্টারপ্রাইজ এ কাজ পায়।
আগের সড়ক ছিল ১২ ফুট। কার্যাদেশে সেটি ২২ ফুটে উন্নীত করার কথা। এর মধ্যে ১৬ ফুট ৫ ইঞ্চি হবে পিচ ঢালাই, পাশে তিন ফুট করে সোল্ডার। এক বছর ছয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। যে সময়সীমা শেষ হয়েছে ২০২৫ সালের ২৮ মে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তারা এখন কাজের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
সরেজমিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার দেখা যায়, নাসিরনগর থেকে ফুলপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার অংশে কাজ হয়েছে। তবে কাজের নিম্নমান ও নিয়মানুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে রাস্তার নুরপুর, পাঠানিশা, চটিপাড়া, চৈয়ারকুড়ি, জেঠাগ্রাম, শ্যামপুর অংশ চলাচলের অনুপযোগী।
স্থানীয় বাসিন্দা বকুল মিয়া বলেন, আমাদের রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ যে কোনো গর্ভবতী যদি এই রাস্তা দিয়ে যায় তার আর হাসপতালে যাওয়া লাগবে না। তিনি রাস্তায় মারা যাবেন। কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদার কাজ করেনি।
নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমএ হান্নান বলেন, ঠিকাদার দীর্ঘদিন যাবত রাস্তার কাজটি ফেলে রেখেছে। এখন তার কাজের মেয়াদই শেষ। আমরা এ রাস্তাটি নিয়ে কী যে ভোগান্তিতে আাছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। যেখানে বেশি গর্ত হয়েছে সেখানে ইউএনও স্যারের মাধ্যমে কিছু ইটের গুঁড়া দিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, সড়কের দুই পাশের গাছ কাটতে বনবিভাগ সময় নিয়েছে দেড় বছর। এছাড়া সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে অনেকে জায়গা ছাড়তে রাজি হয়নি। এজন্য দীর্ঘ সময় লেগেছে। নতুন করে আরও এক বছর সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা নাসরিন বলেন, রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ। ঠিকাদার ধীরগতিতে কাজ করছে। ঠিকাদার যাতে দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করে সেই চেষ্টা করছি।
