হুমাইরা আর আসবে না বলে দাদার আক্ষেপ
সহপাঠীদের বাঁচিয়ে প্রাণ হারায় তানভীর
জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
টাঙ্গাইলের সখীপুরের মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা ও মির্জাপুরের তানভীর আহমেদ।
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হয়েছেন টাঙ্গাইলের সখীপুরের মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা ও মির্জাপুরের তানভীর আহমেদ। মঙ্গলবার সখীপুরে হুমাইরার এবং মির্জাপুরের তানভীরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ মির্জাপুরের নগরভাত গ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার উত্তরায় থাকত সে।
অন্যদিকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমাইরা সখীপুরের হতেয়া কেরানিপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। দেলোয়ার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলার শিক্ষক। জানাজায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
নিহত তানভীরের চাচাতো ভাই সজিব জানায়, ‘তানভীরের স্বপ্ন ছিল পাইলট হওয়ার। সে লক্ষ্য নিয়েই সে প্রচুর লেখাপড়া করত। ছুটিতে যখন গ্রামে আসত, তখনো পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকত। সোমবার বিমান দুর্ঘটনায় তানভীরের মৃত্যুর খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কান্নায় চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।’
তানভীরের বাবা রুবেল মিয়া বলেন, ‘তানভীর অষ্টম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলে ইংলিশ ভার্সনে একই স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। দুজন দুই ভবনে ক্লাস করত। তানভীরের ছুটি হয় দুপুর একটায়, আর ছোটটার সাড়ে ১২টায়। তানভীর কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করত। তানভীর প্রথম শ্রেণি থেকে ক্লাসের প্রথম ছিল। যে কারণে তানভীর ক্লাসের ক্যাপ্টেন ছিল। সবাইকে সারিবদ্ধভাবে নিচে নামাতে গিয়ে তানভীরের মৃত্যু হয়।’
তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণে অনেক হতাহত হয়েছেন। আমরা এর প্রতিবাদ চাই। হুমাইরার দাদা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এবার কুরবানি ঈদে দাদু এসেছিল। দাদু সারাক্ষণ আমার সঙ্গেই থাকত। দাদু আর কোনো দিন আসবে না। আর আমাকে দাদু বলবে না।’ দুষ্টামি করেও মিথ্যা বলত না। আমার সঙ্গে কেন এমন হলো।’
চাচা মিজানুর রহমান ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ঝলসানো শরীর ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে সায়ান ঘটনাস্থল থেকে নিজেই বের হয়ে আসে। পরে তার বাবা-মা শনাক্ত করেছে। ভিডিওতে দেখেছি, সেই প্রথম বের হয়ে এসেছে। পরে রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, একই ঘটনায় সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়ন সোনাপুর গ্রামের রহিমবক্স হাজী বাড়ির আব্দুস সামাদের ছেলে আফনান ফায়াজেরও মৃত্যু হয়েছে। সেও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মঙ্গলবার তাকে ঢাকায় দাফন করা হয়েছে।
