Logo
Logo
×

সারাদেশ

গারো পাহাড়ে আগাম শিম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

Icon

শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

গারো পাহাড়ে আগাম শিম চাষে কৃষকের মুখে হাসি

ছবি: যুগান্তর

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) কর্তৃক ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উদ্ভাবিত বারি শিম-৭ জাতের শিমটি উচ্চ ফলনশীল ও গ্রীষ্মকালে চাষের জন্য উপযুক্ত। তবে এটি সারা বছর চাষ করা যায়।

এ জাতের শিম চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ভারত সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সন্ধ্যাকুড়া এলাকার কৃষক আব্দুল কাদির। আবহাওয়া ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া আগাম শিমের বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও দাম চড়া থাকায় ভীষণ খুশি তিনি।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন গাজীপুরের পোশাক কারখানায় কাজ করতেন এই কৃষক। পোশাক কারখানায় উপার্জিত অর্থে সংসার না চলায় বাড়িতে চলে আসেন তিনি। এরপর থেকেই বাড়ির পাশের জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদ শুরু করেন। ২০২২ সালের জুলাই মাসের শুরুতে ২০ শতাংশ জমিতে শীতকালীন আগাম জাতের শিম কেরালা-১ চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি।

কৃষক আব্দুল কাদির বলেন, ২০২২ সালে ইউটিউবে দেখে কেরালা-১ জাতের শিমের বীজ সংগ্রহ করে চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম। এ বছর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ শেরপুর থেকে উচ্চ ফলনশীল ও গ্রীষ্মকালে চাষের জন্য উপযুক্ত বারি শিম-৭ জাতের শিমের ২৫০ গ্রাম বীজ সংগ্রহ করি। প্রথমবার হওযায় মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে চলতি বছরের মে মাসে নতুন উদ্ভাবিত এ জাতের শিমের বীজ রোপণ করি।

তিনি আরও বলেন, শিম চাষে শ্রমিক খরচ, সুতা, কীটনাশক, পানি, সারসহ ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা তাকে খরচ করতে হয়েছে। ভালো ফলনের জন্য রাত-দিন গাছের যত্ন নিয়েছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাগানজুড়ে শিমগাছে ফুল এসেছে। এসেছে কাঙ্ক্ষিত ফসল। ইতোমধ্যে কয়েক দফায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি।

তার তথ্যমতে, গত তিন দিনে ১৫০ টাকা কেজি ধরে ১ মণ ২০ কেজি শিম বিক্রি করেছেন। এমন অবস্থা চলমান থাকলে আর আবহাওয়া ভালো থাকলে বাগান থেকে আরও লাভ হবেন বলে আশা করি। আমাকে দেখে এলাকায় এখন অনেকেই শিম চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। এটা দেখে খুব ভালো লাগে।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার সন্ধ্যাকুড়া এলাকায় বিভিন্ন সবজিতে ভরে গেছে ফসলের মাঠএর মধ্যে আব্দুল কাদিরের শিম বাগানের জমির আনাচে-কানাচে শিমের সাদা ফুলে ভরে গেছেথোঁকায় থোঁকায় পরিপুষ্ট শিমে ভরে গেছে গাছ। কৃষক আব্দুল কাদির জমিতে চাষ করা শিম বাগান থেকে শিম তুলছেন। সঙ্গে আরেক নারী শ্রমিক শিম গাছের পরিচর্যা করছেন।

সন্ধ্যাকুড়া গ্রামের কৃষক দেলোয়ার বলেন, কাদিরের চাষ করা শিমের বাগানে প্রচুর ফুল ফুটেছে। অল্প সময়ের মধ্যে এ জাতের শিমগাছে ফলও এসেছে অনেক। আমিও এ জাতের শিম চাষের পরিকল্পনা করছি।

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, এ উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের মাটি খুবই উর্বর। তাই এখানকার কৃষকদের সবজি বাগান গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এখন ওই সব এলাকায় ব্যাপক সবজি চাষ হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বেশ কয়েকজন কৃষক আগাম জাতের শিম চাষ করে ভালো ফলন ও বাজারে চড়া মূল্য পাওয়ায় কৃষকরাও খুশি। তাদের দেখা-দেখি অন্যরাও সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম