Logo
Logo
×

সারাদেশ

খেলার মাঠে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট, প্রতিবাদে মানববন্ধন

Icon

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫৮ পিএম

খেলার মাঠে নির্মাণ হচ্ছে মার্কেট, প্রতিবাদে মানববন্ধন

এলাকায় একটিই খেলার মাঠ। পাশেই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই মাঠেই খেলাধুলা করতেন শিক্ষার্থী ও এলাকার তরুণরা। আর এ মাঠেই নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট। এতে খেলাধুলার স্থান হারিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করেছেন এলাকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। যাদের জন্য এ মার্কেট করা হচ্ছে, সেই ব্যবসায়ীরাও এসেছিলেন তাদের কাতারে। সবাই প্রতিবাদ করেছেন এমন সিদ্ধান্তের।

ঘটনাটি রাজশাহীর কাটাখালি পৌরসভার কাপাশিয়া এলাকার।

জানা গেছে, কাপাশিয়া এলাকায় কাটাখালি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ওই মার্কেট নির্মাণ শুরু করেছে। এলাকাবাসীর আপত্তি উপেক্ষা করে সম্প্রতি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পরে অবশ্য বাধার মুখে কাজ থেমে গেছে। পৌরসভার পরিকল্পনা অনুযায়ী, আপাতত একতলা হবে মার্কেটটি। পরবর্তীতে চারতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ হবে। থাকবে কমিউনিটি সেন্টারও।

এ মাঠটিতে এক সময় সপ্তাহের দুইদিন পশুর হাট বসত। কয়েক বছর ধরে শুধু কুরবানির আগে পশুহাট বসত। ফাঁকা মাঠে সারাবছর খেলাধুলা চলত। এখন সব বন্ধ আছে।

মাঠে মার্কেট করার প্রতিবাদে সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টায় কাপাশিয়া বাজারের রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ‘কাপাশিয়ার সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও মহানগর বিজনেস অ্যান্ড টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশ নেন। এছাড়াও কাপাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষও উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে জেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব আকুল হোসেন মিঠু বলেন, ‘আমাদের এলাকায় আর একটাও খেলার মাঠ নেই। আমরা খেলার মাঠ হত্যা করে মার্কেট চাই না। কাপাশিয়া হাটের পাশেই সরকারি জায়গা আছে। সেখানে মার্কেট করা হোক। আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য খেলার মাঠ উন্মুক্ত চাই। এ মাঠ আমরা কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেব না।’

কাপাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজামাল বলেন, ‘খেলার মাঠ ধ্বংস মানে প্রজন্ম ধ্বংস। আমরা মাঠ চাই। আমাদের মাঠ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। স্কুলের পাশে মাঠ থাকবে, সেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে। স্কুলের পাশে মার্কেট-কমিউনিটি সেন্টার হলে স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে। খেলাধুলা ছেড়ে যুবসমাজ মাদকের দিকে ধাবিত হবে। তাই মার্কেট নির্মাণ বন্ধ করতে হবে।’

কাপাশিয়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইসলাম বলেন, ‘বাজার ছেড়ে স্কুলের পাশে গিয়ে খেলার মাঠে মার্কেট করা হচ্ছে। সেখানে মার্কেট হলেও কেউ যাবে না। ব্যবসায়ীদের লাভ হবে না। আবার খেলার মাঠটিও হারিয়ে যাচ্ছে। কার সিদ্ধান্তে কেন সেখানে মার্কেট করা হচ্ছে আমরা জানি না। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।’

কাটাখালি পৌরসভার সচিব সিরাজুম মুনীর বলেন, ‘আমার জানা মতে, এখন সেখানে কাজ বন্ধ আছে বাধার কারণেই। কাজ শুরুর আগেও বাধা এসেছিল। সে সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলাকার লোকজনকে নিয়ে বসা হয়েছিল। তারপরই কাজ শুরু হয়। এখন আবার জটিলতা শুরু হয়েছে। একজন সাধারণ কর্মচারী হিসেবে আমার কিছু করার সুযোগ নেই।’

কাটাখালি পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে মার্কেট করা সম্ভব কিনা এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘লোকজন বিপক্ষে না। কারা বিপক্ষে?’

মানববন্ধনের কথা শুনে তিনি বলেন, ‘কাজ অনেকখানি হয়েছে। তারপর কাজটা কয়েকজন ব্যক্তির জন্য বন্ধ আছে। এটা সরকারি কাজ। লোকজন করতে দেবে না, এটা তো জানি না বরং, মার্কেট নির্মাণের জন্য কয়েকজন আবেদনও করেছিলেন। কারা মানববন্ধন করেছেন, আমরা খোঁজখবর নেব।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম