পতিত হাসিনা সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিপুল আলোচিত গভীর রাতে দেশত্যাগ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে প্রায় তিন মাস আগে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার  মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে।

তখন সজ্জন হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠা ওই পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

অবশেষে রোববার পুলিশ সদর দপ্তরের পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-১ শাখার অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক খন্দকার শামীম ইয়াছমিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে পুনরায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ খবর জানাজানি হলে স্বস্তি ফিরে আসে। 

জানা গেছে, গত ৭ মে গভীর রাতে বিনাবাধায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক মহলসহ সরকারি মহলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আর এমন ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে সামাল দিতে তার নিজ জেলা কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন থেকে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার এবং উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক পদমর্যাদার দুজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের অনেককে আসামি করা হয়। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে ওই মামলা থাকায় আসামি হিসেবে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ দুটি কমিটি তদন্ত শেষে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আনা অন্যদেরও কোনো দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করা হয়। তদন্ত চলাকালে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের পদটি এত দিন শূন্য ছিল।

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৯ মাসের মাথায় গত ৭ মে দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এক মাস পর ৮ জুন চিকিৎসা শেষে তিনি দেশেও ফিরে আসেন।