Logo
Logo
×

সারাদেশ

সাবেক এমপি সাইফুরকে জেলা বিএনপির শোকজ

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:০২ পিএম

সাবেক এমপি সাইফুরকে জেলা বিএনপির শোকজ

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপি পৃথক দুটি অফিস এবং গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি অনুষ্ঠান পৃথকভাবে পালন করাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ পরিস্থিতিতে জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক এমপি সাইফুর রহমান রানাকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে জেলা বিএনপি।

তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও শোকজের জবাব দেননি অভিযুক্ত সাইফুর রহমান রানা। জেলা বিএনপি বলছে দলীয় আলোচনার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ও সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ স্বাক্ষরিত নোটিশ প্রদান করা হয় ৪ আগস্ট। কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়- গত ৭ এপ্রিল নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়। যার নির্দিষ্ট একটি অফিস বিদ্যমান। তারপরও আপনি পূর্বের নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সাইনবোর্ড ও অফিসটি এখনো তার বাসভবনে খুলে রেখেছেন। যা দলে শৃঙ্খলা পরিপন্থি।

এমতাবস্তায় আপনার বিরুদ্ধে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণের কাছে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য বলা হলো।

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক এমপি ও বর্তমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুর রহমান রানা তার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বাসায় উপজেলা বিএনপির অফিস কিংবা সাইনবোর্ড নেই। দলের যখন দুর্দিন ছিল কোথাও অফিস ছিল না তখন আমি আমার বাসায় উপজেলা বিএনপির কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেই। এখন নতুন কমিটি হয়েছে, তারা অফিসে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উপজেলা বিএনপির কোনো গ্রুপিংয়ের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আর থাকবেই বা কেন! আমি তো উপজেলা বিএনপিতে পদ পদবি নেব না। আমি জেলা বিএনপিতে নেতৃত্ব দেই আমি জেলা বিএনপিতেই কাজ করব। এর বাইরেও আমি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য। ৫ আগস্ট পৃথক অনুষ্ঠানের যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে সেটিও সঠিক নয়।

তিনি বলেন, উপজেলা বিএনপি পৃথক একটি সভা-সমাবেশ আয়োজন করে। সেখানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। উপজেলা ছাত্রদল এবং যুবদল পৃথক অনুষ্ঠান আয়োজন করে আমাকে আমন্ত্রণ করে। অতিথি হিসেবে এ অনুষ্ঠানে যাওয়া কোনো অপরাধ হতে পারে না।

জেলা কমিটির পক্ষ থেকে শোকজের পত্র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে সাইফুর রহমান রানা বলেন, অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তাই কোনো জবাব দেইনি।

এ ব্যাপারে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা জানান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুর রহমান রানা নিজের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপিতে দ্বন্দ্ব সংঘাত ও বিভক্তির ইন্ধন দিয়ে চলছেন। ফলে দলকে সুসংগঠিত ও শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, চলতি বছর এপ্রিল মাসে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। জেলা কমিটির অনুমতিসাপেক্ষ নাগেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ভাড়ায় নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির অফিস খোলা হয়। এখান থেকেই পরিচালনা করা হয় উপজেলা বিএনপির সব কার্যক্রম; কিন্তু সাইফুর রহমান রানা তার নিজ বাড়িতে নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপি কার্যালয় সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রেখেছেন। এখান থেকেই তিনি বিপথগামী নেতাকর্মীদের নিয়ে এবং যুবদল, ছাত্রদল ও কৃষক দলের নেতাকর্মীদর নিয়ে দলের গ্রুপিং জিইয়ে রেখেছেন।

গোলাম রসুল রাজা জানান, ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক আনন্দ র‌্যালি ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে উপজেলা মুক্তমঞ্চে দলীয় ব্যানারে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অথচ এই অনুষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে সাইফুর রহমান রানা তার অনুগত কতিপয় নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে কৃষক দল, যুবদল, ছাত্রদলের সমন্বয়ে পৃথকভাবে আনন্দ র‌্যালি বের করেন এবং তার নিজ বাসায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। এসব ঘটনাই দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক সাইফুর রহমান রানাকে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। আজ রাতে দলে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করে বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিতে অবহিত করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেই মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম