তাণ্ডবের ভিডিও ধারণ করা তুহিনের মোবাইল ফোন খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ
মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, গাজীপুর
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ভিডিও ধারণ ও সত্য উন্মোচন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে এ হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে; কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ তার মোবাইল উদ্ধার করতে পারেনি।
ধারণা করা হচ্ছে সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা গেলে ঘটনার রহস্য আরও বেশি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ প্রমাণিত হতো।
সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ বলছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে ঘটনার মোড় ঘুরে যেতে পারে৷ এসব সন্ত্রাসী, তাদের মদদদাতা ও হত্যার আসল রহস্য বের হয়ে আসত।
নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন।
তার সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন দুটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে ভিডিও ধারণ করতেন। স্পর্শকাতর ভিডিও ছাড়া মোটামুটি সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিতেন। তিনি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা এলাকাতেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন। যার কারণে এ এলাকার মোটামুটি সব অনিয়ম ও অপরাধীরা তার পরিচিত ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে- গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক হতে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এ সময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্রাপে ফেলার চেষ্টা করে। এটি যখন বাদশা বুঝতে পারে তখন তার থেকে ছুটতে চায় এবং কিল-ঘুসি মারে। এ সময় সেখানে ওতপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে একটি মুদি দোকানে বাদশাকে কোপানো শুরু করে। এ সময় বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকে। এটি সাংবাদিক তার পেশাগত কারণেই ভিডিও করে। আসামিরা সাংবাদিক তুহিনকে ভিডিও ডিলিট করতে বলে কিন্তু তিনি রাজি হন না। একপর্যায়ে ওই আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনের সন্ত্রাসীরা বাদশা নামে লোকটার উপরে হামলা করে। ওই ঘটনার ২০-৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে সাংবাদিকের ওপর হামলা করে। এই দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দিতেও দেখা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ওসি শাহিন খান বলেন, নিহত সাংবাদিকের দুটি মোবাইল ফোন ছিল; কিন্তু এখনো সেটির খোঁজ আমরা পাইনি। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদেও পাওয়া যায়নি ফোন। আমরা তার নাম্বার ট্র্যাকিং করে রেখেছি। ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশনও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
