পুলিশের লাঠি নিয়ে তরুণকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে দুর্জয় (১৭) নামে এক তরুণকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার এ ঘটনায় রায়হান কবীর নামে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাদী হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে মামলার অনুমতি চান তিনি।
ভুক্তভোগী দুর্জয় মিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। বাদী রায়হান কবীর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মোবারকপুর গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা, ইউএনওর কার্যালয় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ দুপুরে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীর মাঝে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। সেখানে চাল নিতে আসা উপকারভোগীরা সিরিয়াল না মানায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এছাড়া চাল পাচার হচ্ছে- এমন খবরে ইউএনও রুয়েল সাংমা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় ইউএনও পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করেন।
এ ঘটনার পাঁচ মাস পর আদালতে মামলা করেন রায়হান। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান।
বাদী রায়হান বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও ওই দিন দুপুরে পরিষদে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে রুল (লাঠি) নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করেন।
ভুক্তভোগী দুর্জয় মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ওই দিন সাড়ে ১২টার সময় আমি মাকে নিয়ে কার্ডের ভিজিএফের চাল আনতে যাই। পরে লোকজনের ধাক্কায় পরিষদের সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া খুলে গেলে আমি সামনে পড়ে যাই। এ সময় ইউএনও আমাকে মারধর করেন। পরে আমাকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়।
জানতে চাইলে ইউএনও রুয়েল সাংমা যুগান্তরকে বলেন, আমি কাউকে মারধর করিনি। আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত চলছে। ঈদের সময় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা ভিজিএফের মালামাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কিছু জনতাকে আমরা ধরেছি। এরপর তারা আমার সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করেন। আমি তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে ক্যাপচার করছি। ওখানে পুলিশ বা অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। তবে আমি কাউকে মারধর করিনি।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বলেন, রোববার এ নিয়ে একটি ফাইল কার্যালয়ে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
