Logo
Logo
×

সারাদেশ

ভরা মৌসুমেও শরীয়তপুরে দেখা মিলছে না ইলিশের

Icon

কে এম রায়হান কবীর, শরীয়তপুর থেকে

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪০ পিএম

ভরা মৌসুমেও শরীয়তপুরে দেখা মিলছে না ইলিশের

সংগৃহীত ছবি

শরীয়তপুর সদরসহ নড়িয়া, জাজিরা, গোসাইরহাট, ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার বাজারে ভরা মৌসুমেও ইলিশের তেমন আমদানি নেই। চাহিদার তুলনায় বাজারে মাছ কম আসায় দাম খুব চড়া। এতে নিম্ন আয়ের ক্রেতা ও মধ্যবিত্তের পাতে জুটছে না ইলিশ। 

বেচাকেনা কম থাকায় বিক্রেতারা রীতিমত হতাশ। পাশাপাশি ভরা মৌসুমেও ইলিশের দেখা না পেয়ে চরম হতাশার মধ্যে রয়েছে শরীয়তপুরের জেলেরা। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক মাছের মৎস আড়ৎ। নেই আগের মত হাকডাক। 

জেলেরা বলছেন, পদ্মা ও মেঘনা নদীতে প্রত্যাশিত পরিমাণে ইলিশ ধরা না পড়ায় বাজারে ইলিশ কম আসছে। মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, বর্জ্যের দূষণে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায়, খাদ্যশৃঙ্খল (ফুডচেইন) ভেঙে যাওয়ায় ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশের গতিমুখ বদলে যাচ্ছে। এ জন্য ভরা মৌসুমেও মেঘনা ও পদ্মায় ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার সকালে শরীয়তপুর সদর, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদর এবং সখিপুর বাজার, ডামুড্যা উপজেলা সদর ও গোসাইরহাট বাজারে দেখা যায়, বাজারগুলোতে তেমন ইলিশ নেই। অল্পসংখ্যক ইলিশ নিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। তাও আকারে খুবই ছোট, দাম বেশি শুনে অধিকাংশ ক্রেতাই চলে যাচ্ছেন। 

নড়িয়া উপজেলার শরেশ্বর এলাকার ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, ‘ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীর বায়না মেটাতে ইলিশ কিনতে বাজারে আসছিলাম। কিনতে পারছিনা। ইলিশ মাছ আকারে ছোট, সংখ্যায় কম। দাম খুব বেশি। ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম এত চড়া, দাম কমবে কবে? আমাগো পাতে আর ইলিশ জুটব না। ইলিশ এহন বড় লোকগো মাছ।’

ডামুড্যা উপজেলা সদরের মাছ বিক্রেতা হারুন শেখ বলেন, এ বাজারে দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়, এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকায় ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় শ গ্রাম থেকে ২০০ গ্রাম ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭ শত থেকে সাড়ে ৮ শত টাকা।

গোসাইরহাট উপজেলার ইলিশ বিক্রেতা আবদুল রাজ্জাক দেওয়ায় বলেন, ইলিশের এত দাম গত দুই বছরের এ সময়ের দেড় থেকে প্রায় দ্বিগুণ। বাজারে ইলিশ আসছে কম, সাইজে ও ছোট। প্রতিদিন ইলিশ আসে দেড় থেকে দুই মণ। এর অর্ধেকই অবিক্রীত থেকে যায়। বেচাকেনা কম হওয়ায় খুব হতাশ লাগছে।

শুরেশ্বর, পালেরচর ও আলু বাজার ফেরিঘাটের আড়ৎদার জসিম দেওয়ান, বাবুল মাঝি, সলিম মিয়া বলেন, ভরা মৌসুমেও দেখা মিলছে না বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সাধের মাছ ইলিশের। আমাদেও এখানে আগের মত হাক ডাক পরছে না। দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক আড়ৎ। জেলেদের দেওয়া অগ্রিম দাদনের টাকা উত্তোলনের বিষয়ে ও রয়েছে চরম শংকা।  

 এব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশে অধিক মাত্রায় দূষিত হচ্ছে মেঘনা ও পদ্মার নদীর পানি। এসব কারণে ভরা মৌসুমেও ইলিশের তেমন দেখা মিলছে না। চাহিদার তুলনায় আমদানি কম থাকায় দাম স্বভাবতই বেশি। তবে কয়েক দিন পর প্রত্যাশিত ইলিশ পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম