Logo
Logo
×

সারাদেশ

গাজীপুরে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির সুপারিশে অনিয়মের অভিযোগ

Icon

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম

গাজীপুরে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির সুপারিশে অনিয়মের অভিযোগ

গাজীপুরে ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী থেকে ভূমি সহকারী পদে পদোন্নতি প্রদানে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, দুদকের মামলায় চার্জশিটভুক্ত ব্যক্তিকে পদোন্নতির সুপারিশ করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। 

সম্প্রতি গাজীপুর জেলায় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী হিসেবে ২০টি শূন্যপদে ভূমি উপসহকারীদের থেকে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ২০ জনকে পদোন্নতির জন্য বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সুপারিশ পাঠায় রাজস্ব প্রশাসন। 

দুদকের মামলা থাকার কারণে পদোন্নতি প্রার্থী হারুনর রশীদ নামে একজনকে সুপারিশের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তার পরিবর্তে মুহাম্মদ নূর-এ আলম নামে অপর একজনকে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। 

দুদকের মামলায় (বিভাগীয় স্পেশাল জজ কোর্ট, ঢাকার স্পেশাল মামলা নং ৯/২০২৪) চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদ নূর-এ আলমের জন্য সুপারিশ করা হয়।

সূত্র জানায়, ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদটি জেলাভিত্তিক হওয়ায় আন্তঃজেলায় কেউ বদলি হলে তিনি ওই জেলায় সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচিত হবেন। এখানে পদোন্নতির তালিকায় অপেক্ষমাণ অন্তত ১৫ জনকে টপকিয়ে তেমন দুইজন উপসহকারী কর্মকর্তাকে পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। 

পদোন্নতি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কায়সার খসরু, সদস্য সচিব রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, সদস্য ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকতা ইশতিয়াক আহমেদ, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর অভ্র জ্যোতি বড়াল এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা (রাজস্ব শাখা) খলিলুর রহমানের স্বাক্ষরিত ৩৭ জনের একটি খসড়া গ্রেডেশন তালিকা প্রস্তুত করে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। 

এতে বলা হয়- এ তালিকায় যদি ভুল-ক্রটি থাকে তবে সংশোধনের নিমিত্তে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করা সাপেক্ষে যাচাই-বাছাইপূর্বক সংশোধন করে চূড়ান্ত জ্যেষ্ঠতা তালিকা প্রস্তুত করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে। 

পরে অনেকেই তাদের দাবির স্বপক্ষে আপত্তি দাখিল করেন; কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এখানে কারো আপত্তি গ্রহণ করা হয়েছে, আবার কারো আপত্তি গ্রহণ করা হয়নি এবং আপত্তি গ্রহণ করা হয়েছে বা হয়নি এমন তথ্য তাদের জানানো হয়নি। একইভাবে চূড়ান্ত গ্রেডেশন তালিকা ও পদোন্নতির সুপারিশমালা গাজীপুর রাজস্ব প্রশাসনের ওয়্যাবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। 

আরও অভিযোগ রয়েছে, একজন কর্মকর্তা (সদস্য সচিব) অন্য জেলায় বদলি হয়ে গেলে তাকে দিয়ে পিছনের তারিখে (৮ এপ্রিল) স্বাক্ষর করানো হয়। এর দুই মাস পর অর্থাৎ ২ জুন ওই সুপারিশমালা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। 

গাজীপুর জেলা রাজস্ব প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানান, ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা মুহাম্মদ নূর-এ আলমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে- এ বিষয়ে তাদের জানা নেই। 

তার দাবি, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রেরিত পদোন্নতির সুপারিশে কোনো অনিয়ম হয়নি, নিয়মানুযায়ী হয়েছে। এখানে যারা জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করছেন, তাদের কারো বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রয়েছে, কারো বিরুদ্ধে লঘুদণ্ড হিসেবে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রয়েছে, আবার কারো চাকরি অস্থায়ী এবং কেউ এমন আছেন তারা তাদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন দাখিল করেননি বা করলেও অসম্পূর্ণভাবে করেছেন। 

এ বিষয়ে জানতে পদোন্নতি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ও গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কায়সার খসরুর কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং তার ব্যবহৃত সরকারি নাম্বারে একাধিকবার ফোন করেও বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম