Logo
Logo
×

সারাদেশ

ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, প্রতিশোধ নিতে টেঁটা দিয়ে মারল প্রতিপক্ষকে

Icon

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৮:১২ পিএম

ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, প্রতিশোধ নিতে টেঁটা দিয়ে মারল প্রতিপক্ষকে

নেত্রকোনা সদরের মৌগাতী এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে সাবেক ইউপি সদস্যসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিশোধ নিতে টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করা হয় প্রতিপক্ষকে।

শনিবার রাতে সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের জামাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- জামাটি গ্রামের বাসিন্দা ও ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. দোজাহান মিয়া (৪৫) এবং একই গ্রামের নূর মোহাম্মদ (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়নের জামাটি গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার ও স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দোজাহান মিয়ার কাছ থেকে একই গ্রামের আমজাদ মিয়া গত দুই বছর আগে জমি বিক্রির কথা বলে ৫ লাখ টাকা নেন। এ নিয়ে আমজাদের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে দোজাহানের বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে শনিবার রাতে জেলা বিএনপির সম্মেলন থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের রাস্তায় দুর্বৃত্তরা ধারালো দা দিয়ে দোজাহানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাতেই নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে এবং লাশের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় খবর ছড়িয়ে পড়লে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সেখান থেকে পুলিশ চলে যাওয়ার পর একই রাত ১০টার দিকে দুইপক্ষের মধ্যে আবারও কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে ইউপি মেম্বারের সমর্থক মাহতাব উদ্দিন মাতুর নেতৃত্বে নূর মোহাম্মাদের বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

এ সময় নূর মোহাম্মদ টেঁটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। হামলায় নূর মোহাম্মদসহ তার মা মনোয়ারা বেগম, মোফাজ্জল মিয়া, রফিক আহত হন। পরে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে নূর মোহাম্মদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আহত অপর তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

রোববার দুপুরে সাবেক ইউপি সদস্য দোজাহানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় স্বজনদের আহাজারি।

জানতে চাইলে দোজাহানের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী লিপু আক্তার বলেন, আমজাদের মেয়ের বাড়িতে গিয়ে দোজাহান মেম্বার দাওয়াত খাওয়াতে ক্ষিপ্ত হন আমজাদ। এ নিয়ে তিন দিন আগে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শনিবার রাতে নেত্রকোনা থেকে বাড়িতে আসার পথে ওরা কয়েকজন মেম্বারকে কুপিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যায়। আমরা এর বিচার চাই।

অপরদিকে নূর মোহাম্মদের বাড়িতে গিয়ে জানতে চাইলে তার কয়েকজন স্বজন জানান, শনিবার রাতে ঘরে নূর মোহাম্মাদ খেতে বসছিল। সে মেম্বারের হামলার ঘটনা কিছুই জানত না। বাড়িতে বোনের বিয়ের আলাপে লোকজন আসবে, এ নিয়ে আলাপ চলছিল। পরে ১০-১২ জন লোক গিয়ে কাতরা বল্লম দিয়ে আঘাত করে তাকে মারাত্মক আহত করে। এ সময় আরও কয়েকজন আহত হন। পরে আহত চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে নূর মোহাম্মাদ মারা যান। তারা এ হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ রোববার বলেন, নিহত দুইজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আহতরা নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন নারীকে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানান তিনি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম