জীবন রক্ষার উদ্যোগে ডিএনসিসির অংশীদার হলো বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মে ২০২১, ০১:৪৯ পিএম

করোনার সংক্রমণরোধে এবং হাজারো মানুষের জীবন বাঁচাতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের অংশগ্রহণে 'ম্যাস মাস্কিং ক্যাম্পেইন' শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে টেকসইভাবে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি করার মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ হ্রাস এই ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে চলা এই ক্যাম্পেইনে আরো অংশ নেয় ইনোভেশন ফর পোভার্টির অ্যাকশন (আইপিএ), ইয়েলে বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড মেডিকেল স্কুল, সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য শক্তি ফাউন্ডেশন, ব্র্যাকের গভার্নেন্স অ্যান্ড ডেভলোপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিআইজিডি) এবং বিডি ক্লিন।
অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই তার তরুণদের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলার মাধ্যমে ১০০ স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে জীবন রক্ষাকারী এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করছে।
এই ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আয়োজিত প্রথম মিটিংয়ে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনার ঝুঁকির মধ্যে আমাদের জীবন ব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত তা শেখা এখন গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে মাস্ক পরা এ ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বড় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। আমি অনেক মানুষের সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন একটি সচেতনতা ক্যাম্পেইন আয়োজন করতে পেরে আনন্দিত।
সিআরআই তার ফেসবুক পেজে জানায়, মহামারির শুরু থেকেই সিআরআই তার তারুণ্যের প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলার স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা মানুষগুলোকে সচেতন করে তুলতে এবং বিভিন্নভাবে সহায়তা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। এবারো সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে ডিএনসিসি'র এই ক্যাম্পেইনের সঙ্গে রয়েছে ইয়াং বাংলা।
এই মাস্ক ক্যাম্পেইনটি মূলত এনওআরএম বা ‘নর্ম’ মডেল অনুসরন করে আয়োজিত হচ্ছে যার মূল লক্ষ্য মাস্ক পরিধান করাকে সকলের জীবনের অংশ করে নেয়া। স্থানীয় এনজিও গ্রিন ভয়েসের সঙ্গে অংশগ্রহণ মূলকভাবে এই মডেলটি তৈরি করেছে ইয়েলে বিশ্ববিদ্যালয়, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইপিএ।
দেশের ৬০০ ইউনিয়নের ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণে বিগত চারমাসে সম্পন্ন করা হয়েছে এই এনওআরএম (নর্ম) গবেষণা কার্যক্রম।
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফ্রি মাস্ক সরবরাহ, মাস্ক পরিধানের গুরুত্ব বিষয়ক তথ্য সরবরাহ, পাবলিক পরিবেশ সকলকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা এবং জনপ্রিয় নেতৃত্বের কাছ থেকে সচেতনতা সৃষ্টি।
এই ‘নর্ম’ মডেল বাস্তবায়নের মাধ্যমে টেকসই ভাবে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ানো সম্ভব যা ক্যাম্পেইন শেষ করার ১০ সপ্তাহ পরেও কার্যকর থাকছে। ঢাকার পরিস্থিতি এই ক্যাম্পইন মডেলকে ব্যবহার করছে ডিএনসিসি।
ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন শপিং মল, মার্কেট এবং যাত্রা পথে ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সে কারণেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৮টি জনবহুল এলাকায় ১৫০ সেচ্ছাসেবক নিয়ে মাস্ক ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য এই ‘নর্ম’ মডেলে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে।
শক্তি ফাউন্ডেশনের উপ নির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, যতটুকু অনুমান করা যাচ্ছে, কোভিড-১৯ ভবিষ্যতেও আমাদের সঙ্গেই থাকছে। আর সে কারণেই আমাদের নিত্য কার্যক্রম ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে এমন পলিসি গ্রহণ করতে হবে যার মাধ্যমে কোভিডের বিস্তার রোধ করা সম্ভব। করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ লাখের বেশি নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য শক্তি ফাউন্ডেশন সচেতনতা কার্যক্রম, বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ, হটলাইন থেকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছে। শক্তি ফাউন্ডেশন এমন একটি ক্যাম্পেইনের অংশ হতে পেরে গর্বিত।
করোনা মহামারীকালে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেন না বাড়ে সেই লক্ষে এই ক্যাম্পেইন গ্রহণ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যেখানে ইয়াং বাংলার তত্ত্বাবধায়নে অংশ নিচ্ছে ১০০ জন সেচ্ছাসেবক।
ভবিষ্যতে এই মডেল কার্যকর হলে দেশের আরো বিভিন্ন নগরে তার প্রয়োগ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।