টি ২০ সিরিজ
হেসেখেলে সিরিজ জয় লিটনদের
জ্যোতির্ময় মন্ডল, সিলেট থেকে
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ম্যাচ শুরু হতে তখনো দেড় ঘণ্টা বাকি। নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করে একা বের হতে পারছিলেন না শামীম হোসেন। তাকে ঘিরে ধরেছিলেন দর্শকরা। সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এসে শামীমকে উদ্ধার করেন! নেটে তখন বড় বড় শট খেলছেন নুরুল হাসান। অনুশীলনের মতো ঝড় তোলা ব্যাটিং ম্যাচেও দেখতে চেয়েছিলেন দর্শকরা। কিন্তু সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগালেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। এশিয়া কাপের প্রস্তুতি সিরিজের দ্বিতীয় টি ২০তে কাল টস জিতেও আগে ব্যাটিংয়ের ঝুঁকি নেয়নি স্বাগতিকরা। সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের ম্যাচের চেয়েও বাজে ব্যাটিং করে নেদারল্যান্ডস অলআউট হয় ১৭.৩ ওভারে মাত্র ১০৩ রানে। জবাবে ১৩.১ ওভারেই নয় উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।
টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য বড় জয়েই খুশি। টানা তিনটি সিরিজ জিতলেন অধিনায়ক লিটন। শ্রীলংকার মাটিতে জয়ের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হারানো। এবার ডাচদের বিপক্ষে অনুমিতই ছিল সিরিজ জয়। সিরিজটি এশিয়া কাপের প্রস্তুতি। উইকেট ও কন্ডিশন মনে হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো। কাল সিলেটে দিনের তাপমাত্রা ৩৬-৩৭ ডিগ্রি থাকলেও অনুভব হয়েছে প্রায় ৫০ ডিগ্রি! আবার সন্ধ্যা নামার আগেই ঠান্ডা পরিবেশ। রাতে পড়ছে শিশির। উইকেট স্পোর্টিং, ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগের জন্যই সুবিধা আছে। এশিয়া কাপেও খেলা হবে ফ্লাডলাইটের নিচে। এই পরিবেশে বোলাররা নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন ভালোভাবে। কিন্তু ব্যাটিংয়ে সেই অর্থে প্রস্তুতি হলো না। ছোট লক্ষ্যে নেমে কালও ভালো শুরুর পর ফেরেন পারভেজ হোসেন (২৩)। দুই বাউন্ডারির সঙ্গে একটি ছক্কা মেরে দারুণ এক রেকর্ড স্পর্শ করেন তিনি।
এক পঞ্জিকা বর্ষে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২২টি ছক্কার রেকর্ড গড়েন। পরে ফিফটির পথে আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান রেকর্ডটি নিজের করে নেন। নবম ওভারের প্রথম বলে ম্যাক্স ও’ডাউডকে ছক্কা মেরে পারভেজ হোসেনের রেকর্ডে ভাগ বসান তানজিদ। পরে ডাউডকে আরও দুটি ছক্কা মেরে বছরে
২৪টি ছক্কর নতুন রেকর্ড গড়েন তিনি। ২০২৪ সালে তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলী মেরেছিলেন ২১টি করে ছক্কা। পারভেজের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তানজিদ (৫৪*) ও লিটন (১৮*) ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ডাচ পেসার কাইল ক্লাইন একমাত্র উইকেটটি নেন।
দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁ-হাতি পেসার শরীফুল ইসলাম ও লেগ-স্পিনার রিশাদ হোসেনের জায়গায় খেলেছেন তানজিম হাসান ও নাসুম আহমেদ। উইকেট পেয়েছেন স্বাগতিক দলের পাঁচ বোলারই। সুযোগ পেয়েই ম্যাচসেরা নাসুম তুলে নেন সর্বোচ্চ তিন উইকেট। আগের ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে সেরা হওয়া তাসকিন পান দুটি উইকেট। এছাড়া মোস্তাফিজুর রহমান দুটি এবং মেহেদী ও তানজিম একটি করে উইকেট নেন। এদিন সফরকারী দলের মাত্র তিন ব্যাটার দুই অঙ্কের দেখা পান। সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে আরিয়ান দত্তের ব্যাট থেকে। এছাড়া বিকরমজিৎ সিং ২৪ এবং শারিজ আহমেদ ১২ রান করেন। নেদারল্যান্ডসের এটাই বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন স্কোর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নেদারল্যান্ডস ১০৩/১০, ১৭.৩ ওভারে (আরিয়ান দত্ত ৩০, বিক্রমজিৎ সিং ২৪, শারিজ আহমেদ ১২, ম্যাক্স ও’ডাউড ৮, স্কট এডওয়ার্ডস ৯। নাসুম আহমেদ ৩/২১, তাসকিন আহমেদ ২/২২, মোস্তাফিজুর রহমান ২/১৮, মেহেদী হাসান ১/২৪, তানজিম হাসান ১/১৬)।
বাংলাদেশ ১০৪/১, ১৩.১ ওভারে
(পারভেজ হোসেন ২৩,
তানজিদ হাসান ৫৪*, লিটন দাস ১৮*। কাইল ক্লাইন ১/২০)।
ফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : নাসুম আহমেদ।
