মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ যা পাওয়া গেল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গতকাল (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসাটির একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। এতে নারী ও শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়- ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে সিআইডির ক্রাইম স্কিন ইউনিট যেসব সরঞ্জামাদি পেয়েছে, সেগুলোর একটি তালিক দিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- গোলবল জাতীয় কথিত বোমা, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাইপ বোমা, শর্টগানের সীসা গুলি, সাদা রংয়ের পাউডার (বোমা তৈরির কথিত কাঁচামাল), ক্যামিকেল কনটেইনার, বৈদ্যুতিক ড্রিল মেশিন, হাতুড়ি, টাকা গণনার মেশিন, একটি ফিঙ্গার স্টেপ চাকু সিলভার রঙের, হ্যান্ডকাপ, স্পাই ক্যামেরা, বিভিন্ন ধর্মীয় বই, প্লাস্টিকের পুরুষাঙ্গ, সেক্স জেল, গ্লিসারিন, পুলিশের বেল্ট, ওয়্যারলেস সেটের চার্জার, রিমোট কন্টোল চাবির রিং।
পরে উদ্ধারকৃত ককটেল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঝিলমিল এলাকার ফাঁকা স্থানে নিষ্ক্রিয় করেছে বোম ডিস্পোজাল ইউনিট।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে। এখনো অভিযান চলছে। ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে ক্রাইম সিন দল ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জাকির হোসেন জানান, হঠাৎ বিকট শব্দের সঙ্গে একটি ইটের মতো বস্তু তার মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে তাকে আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভবনের মালিক পারভিন বেগম জানান, ২০২২ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। পরে মুফতি হারুন নামে এক ব্যক্তি মাদ্রাসা পরিচালনার উদ্দেশে ভবনটি ভাড়া নেন। প্রায় তিন বছর ধরে নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করা হচ্ছিল। আলামিন ও তার স্ত্রী আছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। মুফতি হারুন মাঝে মধ্যে সেখানে আসতেন।
বিস্ফোরণে মাদ্রাসা ভবনের আসবাবপত্র, জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এবং দেয়ালের একটি অংশ উড়ে যায়। আশপাশে কাঁচ ও দেয়ালের টুকরা ছড়িয়ে পড়ে। পাশের মোহাম্মদ হোসেনের মালিকানাধীন ভবনটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনায় মাদ্রাসাশিক্ষক আলামিনের দুই ছেলে উমায়েদ (১০) ও আবদুল্লাহ (৮), মেয়ে রাবেয়া (৬) এবং পাশের একটি সিএনজি গ্যারেজের শ্রমিক জাকির হোসেন (৪৫) আহত হয়েছেন।
