Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বিশ্ব অস্টিওপরোসিস দিবস আজ

দেশের ৬০ লাখ মানুষ হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছে

Icon

জাহিদ হাসান

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের ৬০ লাখ মানুষ হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছে

প্রতীকী ছবি

দেশের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছেন। বয়স্ক যারা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের প্রতি ১০ জনের ৯ জনই নারী। চিকিৎসকদের ধারণা আগামী পাঁচ বছরে অসংক্রামক ব্যাধি হিসাবে শীর্ষ পাঁচে এই হাড়ক্ষয় রোগ উঠে আসবে। কিন্তু হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্তদের অনেকেই এ সম্পর্কে জানেন না। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যুও ঘটতে পারে এ রোগে। এ তথ্য বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির।

প্রতি বছর ২০ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব অস্টিওপরোসিস দিবস। দিনটি উদযাপন করে ইন্টারন্যাশনাল অস্টিওপরোসিস ফাউন্ডেশন, যার লক্ষ্য সারা বিশ্বে হাড়ের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব তুলে ধরা, রোগ প্রতিরোধ ও সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা।

এমন প্রেক্ষাপটে অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সারা বিশ্বের মতো আজ বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব অস্টিওপরোসিস দিবস-২০২৫। এবারের প্রতিপাদ্য : ‘ইট’স আনএক্সসেপ্টেবল! অর্থাৎ এটা অগ্রহণযোগ্য, অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত লাখো মানুষের চিকিৎসা ও সচেতনতার ঘাটতি আর কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চিকিৎসকদের তথ্যমতে ভারতে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ অস্টিওপরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছেন। বাংলাদেশে ২০২২ সালের সবশেষ জনশুমারি অনুযায়ী বর্তমানে ৫০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী মানুষ প্রায় ৩ কোটি। সেই হিসাবে দেশের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ এ রোগে ভুগছেন। এ হাড়ক্ষয় রোগে মেরুদণ্ডের হাড় ভাঙার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবং এ রোগের কারণে মৃত্যু ঝুঁকি প্রায় ৮ গুণ বেড়ে যায়। তবে ওষুধ সেবন করে ৬ থেকে ১২ মাস চিকিৎসা নিলে অস্টিওপরোসিস জনিত হাড় ভাঙার ঝুঁকি অর্ধেক কমে আসে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার (অর্থপেডিক্স ও ট্রমা) ডা. শেখ মু. আব্দুল্লাহ আল রাফি যুগান্তরকে বলেন, অস্টিওপরোসিস হলো-একটি দীর্ঘস্থায়ী হাড়ের রোগ, এতে হাড়ের ঘনত্ব ও গুণগত মান ধীরে ধীরে কমে যায়। হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। সামান্য আঘাত বা হঠাৎ পড়ে যাওয়া থেকেও হাড় ভেঙে যেতে পারে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, অস্টিওপরোসিসকে ‘নীরব রোগ’ বলা হয় কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো উপসর্গ থাকে না, যতক্ষণ না হাড় ভেঙে যায়। তবে অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধযোগ্য রোগ। অস্টিওপরোসিসের প্রধান কারণগুলো-হরমোনজনিত পরিবর্তন: বিশেষ করে রজঃনিবৃত্তির পর নারীদের ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ঘনত্ব কমে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-এর অভাব। ব্যায়ামের ঘাটতি। ধূমপান ও অত্যধিক অ্যালকোহল পান : হাড়ের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড, থাইরয়েড হরমোন আধিক্য বা কিছু অ্যান্টিকনভালসান্ট ওষুধ হাড় দুর্বল করে। বেশি ঝুঁকিতে থাকেন রজঃনিবৃত্ত নারী, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ ও নারী।

বিশ্বে আনুমানিক ২০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। প্রতি ৩ জন নারীর মধ্যে ১ জন এবং প্রতি ৫ জন পুরুষের মধ্যে ১ জন অস্টিওপরোসিসে ভুগছেন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধযোগ্য রোগ। পুষ্টিকর খাদ্য যেমন; দুধ, দই, পনির, ছোট মাছ, তিল, পালংশাক, ডিম ইত্যাদি ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। প্রতিদিন সকালে ১৫-২০ মিনিট রোদে থাকলে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয় যেটি অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করতে পারে। এ ছাড়া নিয়মিত হাঁটা, দৌড়, নাচ বা হালকা ওজন তোলা ব্যায়াম হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম