শীতের আগমনী হাওয়ায় গলার যত সমস্যা ও করণীয়
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঠান্ডা আবহাওয়া, ধুলাবালি ও আর্দ্রতার পরিবর্তনের কারণে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নভেম্বরের মৃদু ঠান্ডা বাতাস শরীরে এনে দেয় আরাম, কিন্তু এ সময়ই বেড়ে যায় নাক-গলার সংক্রমণ। ঠান্ডা আবহাওয়া, ধুলাবালি ও আর্দ্রতার পরিবর্তনের কারণে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সক্রিয়তা বাড়ে, দেখা দেয় গলাব্যথা, স্বর বসে যাওয়া বা টনসিলের প্রদাহ।
* ফ্যারিনজাইটিস
▶ লক্ষণ : গলাব্যথা, খুসখুসে কাশি, হালকা জ্বর বা কথা বলতে কষ্ট এগুলোই ফ্যারিনজাইটিসের সাধারণ উপসর্গ। সকালে ঘুম থেকে উঠে গলা শুকিয়ে যাওয়া বা গিলতে ব্যথা হতে পারে।
▶ করণীয় : ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে গড়গড়া করুন, আদা, মধু, লবঙ্গ বা গরম চা ও স্যুপ গলায় আরাম দেয়। প্রয়োজনে প্যারাসিটামল বা অ্যান্টিহিস্টামিন নিন।
গলাব্যথা দুই দিনের মধ্যে না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, কারণ সংক্রমণ কান বা নাকে ছড়াতে পারে।
* কণ্ঠস্বর বসে যাওয়া
▶ কারণ : শুষ্ক বাতাস, ধুলাবালি, ঠান্ডা বা অ্যালার্জিজনিত প্রদাহে কণ্ঠনালি শুকিয়ে যায়, ফলে স্বর ভেঙে যায়।
▶ করণীয় : রাতে বা ভোরে বের হলে গলা ও কান ঢেকে রাখুন। মোজা পরুন, ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন। দিনে ২-৩ বার গরম পানির ভাপ নিন। মেনথল মিশানো ভাপ ইনহেল করলে উপকার মেলে। বেশি পানি পান করুন, এতে গলা আর্দ্র থাকে।
* টনসিলের সংক্রমণ
▶ কারণ : শীতে টনসিলের প্রদাহ বেশি হয়। টনসিল হলো গলার ভেতরের লসিকাগ্রন্থি, যা জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা দেয়। ঠান্ডা পানি, বরফজাত খাবার বা দুর্বল শরীরে এটি সহজে সংক্রমিত হয়।
▶ লক্ষণ : গলা ব্যথা, গিলতে কষ্ট, জ্বর, কানে ব্যথা, গলার নিচে ফোলা।
▶ করণীয় : গরম তরল খাবার ও পানীয় গ্রহণ করুন। ঠান্ডা পানি ও খাবার পরিহার করুন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন। সংক্রমণ তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। বারবার টনসিল ফুলে গেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
মূলত সতর্ক থাকাটাই হচ্ছে শীত মৌসুমের সবচেয়ে বড় সচেতনতা। শুধু সতর্ক থাকলেই এই সময় সুস্থ থাকাটা অসম্ভব কোনো বিষয় নয়। তাই শীত কাটুক সুস্থতায়।
লেখক : আবাসিক সার্জন, নাক-কান-গলা বিভাগ, সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
