|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনাভাইরাস নিয়ে একটা হাস্যকর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শোনা গিয়েছিল। ওই তত্ত্বটি ছিল এমন যে, চায়নার হুবেই প্রোভিন্সের উহান সিটিতে অতি সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভাইরাস জীবাণু নিয়ে গবেষণা কেন্দ্র 'উহান ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজী' থেকে চায়নার উহান সিটিতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে, এটা অনেকটা দূর্ঘটনা বশত’। তবে বাস্তবে এ তত্ত্বের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাস উহান সিটির জীবজন্তু বাজার হুয়ানান থেকে প্রথমে বাদুড় থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়েছে এবং পরে মানুষ থেকে মানুষে ভয়াবহ ভাবে সংক্রমিত হয়েছে এবং হচ্ছে। বাদুড়, সাপ, ব্যাঙ, বিচ্ছু ইত্যাদি খাওয়া চীনাদের শত সহস্র বছরের ঐতিহ্যের অংশ। এবং তারা তা খেয়ে আসছে।
মানুষ থেকে মানুষে কিভাবে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে?
বাদুড় থেকে এখন আর করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছেনা। এখন এটা আক্রান্ত রোগী থেকে সুস্ত মানুষে ছড়াচ্ছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর খুব নিকটে (৬ ফুটের মধ্যে) থাকলে কিংবা তার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ মেলামেশার ফলেই এটা ছড়াচ্ছে।
চায়না এখন বিপর্যয়ের মুখে এই করোনাভাইরাস নিয়ে। তবে তাদের কিছু গৃহীত পদক্ষেপে এটা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বিশ্বব্যাপী ও তেমন একটা মহামারী হিসেবে ছড়িয়ে পড়েনি।
লক্ষণ
যদিও এখনো সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছেনা করোনাভাইরাসের দেহে প্রবেশের পর ঠিক কত দিনের মধ্যে এর লক্ষন দেখা দেবে তথাপি মার্স ভাইরাসের উপর ভিত্তি করে বলা হচ্ছে সাধারণত ২ থেকে ১৪ দিন সময় নেয় করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষন প্রকাশে।
সাধারণত জ্বর সর্দি হাঁচি কাশি আর শ্বাসকষ্ট ই এ ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ।
রোগীর শরীরে ভাইরাস আছে কিন্তু লক্ষণ নেই এমন অবস্থায়ও করোনাভাইরাস এক থেকে অন্যতে ছড়াতে পারে। একে বলে এসিমটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন। তবে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) এর মতে এ রকম সংক্রমণের হার কম।
ভুল ধারণা
খুব প্রচলিত একটা ভুল ধারনা সবার মনের মধ্যে যায়গা করে নিয়েছে সেটা হলো, মাস্ক পরে হাটলেই বোধহয় করোনাভাইরাস এর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আসলে ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়। এটা অসৎ ঔষধ ব্যবসায়ী ও রুমাল ব্যবসায়ীদের একটা প্রোপাগান্ডা বলা যায়।
করোনাভাইরাসের ঔষধ
করোনাভাইরাস এর টিকা এখনো আবিষ্কার হয় নি এবং এর শতকরা একশতভাগ কার্যকরী সফল কোন ঔষধও নেই। এন্টিভারাল, এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিস্টামিন, এন্টি পাইরেটিক আপাতত ব্যবহার হচ্ছে বেশি।
ভয়ের কিছু?
আপাতত ভয়ের তেমন কোন কারণ নেই, কারণ এ ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর হার শতকরা ২ জন। অর্থাৎ ১০০ জন ভাইরাসের সংক্রমণ হলে মারা যাচ্ছেন মাত্র ২ জন। তবে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত কেউ দেশে ঢুকতে না পারে। আর রোগটা ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
লেখক: ডা. সাঈদ এনাম
সহকারী অধ্যাপক, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
