|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েড বা এমএমপি একটি অটোইমমিউন রোগ, যা প্রাথমিকভাবে শরীরের বিভিন্ন মিউকাস মেমব্রেনকে আক্রমণ করে থাকে।
প্রায়ই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে মুখ ও চোখের মিউকাস মেমব্রেন। মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েড রোগের কারণে এপিথেলিয়াল সংযুক্তি অর্থাৎ বহিরাবরণের সংযোজন নষ্ট হতে থাকে নিচের কানেকটিভ টিস্যু থেকে।
যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি, তাদের ক্ষেত্রে প্রধানত এ রোগ হয়ে থাকে। পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের চারগুণ বেশি হয়ে থাকে। মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েড ওরাল মিউকোসা ছাড়াও চোখ এবং ত্বককে আক্রান্ত করে থাকে। চোখের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন না করলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েডে রক্তপূর্ণ ব্লিস্টার থাকে, যা ব্যথাযুক্ত হয়ে থাকে। ব্লিস্টার ভেঙে আলসার বা ঘা মিউকোসাল সারফেস হয়ে থাকে। ব্লিস্টার দেখতে গোলাকার হয়ে থাকে, যদিও তা অসম হতে পারে। এ সময় কথা বলতে এবং খাদ্যদ্রব্য গ্রহণে সমস্যা হতে পারে। মুখের অভ্যন্তরে বিশেষ করে মাড়ি আক্রান্ত হয়ে থাকে, যার কারণে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং মাড়িতে ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে। মাড়ির এ অবস্থা ডেসকোয়ামেটিভ জিনজাইভা নামে পরিচিত।
মাড়ি ছাড়াও সফট প্যালেট আক্রান্ত হয়ে থাকে। বাক্কাল মিউকোসাতে ইরোশন বা ক্ষত লক্ষ্য করা যায়। মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েড রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ ছাড়াও বায়োপসি প্রয়োজন।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সাইক্লোফসফামাইড, অ্যাজাথিওপ্রিন সোডিয়াম এবং ইন্ট্রাভেনাস ইমমিউনোগ্লোবিউলিন জাতীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে। ওরাল এবং অকুলার মিউকাস মেমব্রেনের ক্ষেত্রে মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েডের চিকিৎসায় এটানারসেপ্ট হতে পারে কার্যকরী চিকিৎসা। মিউকাস মেমব্রেন পেমফিগয়েড থেকে মুখের অভ্যন্তরে আলসার চিকিৎসা অন্যান্য আলসারের চিকিৎসা থেকে আলাদা। মুখের ক্ষেত্রে এনেসথেটিক বা এনালজেসিক মাউথওয়াশ ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবহার প্রয়োজন হতে পারে। স্থানীয়ভাবে স্টেরয়েড বিভিন্নভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োগ প্রয়োজন হতে পারে।
মাড়ি আক্রান্ত হলে দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে। অতএব মুখের অভ্যন্তরে মাড়ি, তালু, বাক্কাল মিউকোসাতে কোনো ব্লিস্টার দেখা দিলে এবং ব্লিস্টার ভেঙে আলসার বা ঘা দেখা দিলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কোনোভাবেই কালক্ষেপণ করা যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
লেখক : মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
dr.faruqu@gmail.com
