ভুল সবই ভুল
সব চুলকানিতে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ কি কাজ করে?
ডা. সজল আশফাক
প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০১৮, ১০:৫৫ এএম
ডা. সজল আশফাক
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শরীর চুলকানো একটি প্রতিদিনের সমস্যা। শরীর একটু চুলকালেই অধিকাংশ লোক অ্যান্টি হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ, যেমন হিস্টামিন, অ্যান্টি হিস্টা, হিস্টাল, এভিল, অ্যালট্রল, লোরাটিন ইত্যাদি খেয়ে থাকেন।
এসব এন্টিহিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ সবধরনের চুলকানিতে কার্যকর নয়। কিন্তু অনেকেই যে-কোনো চুলকানিতে অ্যান্টি হিস্টাসিন ওষুধ খেয়ে ফেলেন।
এটি মোটেও ঠিক কাজ নয়। চুলকানোর কারণ না জেনে অযথা অ্যান্টি হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ খেয়ে কোনো লাভ নেই। এতে ওষুধগুলোর অপচয় হচ্ছে।
শরীর চুলকানোর অনেক কারণ রয়েছে। আবার অন্যদিকে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ হিস্টামিনের বিপরীতে কাজ করে।
শরীর বিশেষ কিছু বিরূপ পরিবেশের মুখোমুখি হলে রক্তে হিস্টামিন নামক একধরনের পদার্থ বেরিয়ে আসে।
হিস্টামিন নামক এই পদার্থটি চুলকানির উদ্রেক করে থাকে। সাধারণত অ্যালার্জিজনিত কারণে শরীরে হিস্টামিনের আগমন ঘটে এবং শরীর চুলকায়।
কাজেই যেসব চুলকানি হিস্টামিনের কারণে হয়, শুধুমাত্র সেসব ক্ষেত্রে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ কার্যকর হবে।
অন্য কারণে শরীর চুলকালে সেক্ষেত্রে অ্যান্টি হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ বিশেষ কোনো কাজে আসে না।
শরীর চুলকায় অথচ অ্যান্টি হিস্টামিনের কোনো ভূমিকা নেই, তেমন কিছু পরিস্থিতিরা-
# ডায়াবেটিসের কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে।
# মানসিক কারণে কিংবা চকলেট খেলে এড্রেনার্জিক আর্টিকেরিয়া দেখা দেয়।
# অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায়।
# রৌদ্রের প্রভাবে চুলকালে বা সোলার আর্টিকেরিয়া হলে
# রক্তশূন্যতা।
# অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস।
# কিডনির দুর্বল কার্যকারিতার ফলে রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে।
# কিছু-কিছু চর্মরোগে প্যারাক্সিসমাল প্রæরাটিস বা হঠাৎ চুলকানি হলে।
# গর্ভাবস্থায়।
# শীতকালে অতিরিক্ত ও সাবান ব্যবহার।
# মাথা চুলকালে।
# কৃমি, ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়ার জন্য পায়ুপথ এবং প্রসবপথের আশেপাশে চুলকালে।
উল্লিখিত চুলকানিতে অ্যান্টি হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ খেতে হবে এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। অ্যান্টি হিস্টামিন সব চুলকানির বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ নয়।
লেখক: ডা. সজল আশফাক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, স্বাস্থ্য নিবন্ধকার।
