Logo
Logo
×

ডাক্তার আছেন

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে করণীয়

Icon

ডা. হাসনা হোসেন আঁখি

প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৩, ০১:৫৪ পিএম

গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে করণীয়

বর্ষাকালে আর্দ্র আবহাওয়ায় অন্য পোকামাকড়ের সঙ্গে মশার উপদ্রবও বেড়ে যায়। যার ফলে মশাবাহিত বিভিন্ন রোগজীবাণু এ সময় আমাদের আক্রমণ করে। বিভিন্ন রোগের মধ্যে ডেঙ্গু একটি ভয়াবহ রোগ। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে; বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এ রোগ মা ও গর্ভের শিশুর জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। ডেঙ্গু হলো একটি মশাবাহিত রোগ। এডিস মশাই হলো এর বাহক। এ ধরনের মশা সাধারণত বদ্ধ পানিতে ডিম পাড়ে। এডিস মশার কামড়ে সাধারণত ডেঙ্গু হয়। এ মশা প্রায় ৪০ দিনের মতো বেঁচে থাকে এবং পুরোটা সময় এ ভাইরাস বহন করে। এডিস মশার জন্য ডিম পাড়ায় সবচেয়ে ভাল সময় হচ্ছে বর্ষাকাল এবং এডিস মশা সাধারণত সকালে ও বিকালের দিকে খুব বেশি কামড়ায়।

আক্রান্ত ব্যক্তির অনেক উচ্চতাপমাত্রায় জ্বর হয়, যার কারণে সহজেই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করা যায়। জ্বরের সঙ্গে থাকে মাথাব্যথা, হাত ও পায়ের জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখের পেছনে ব্যথা করা। বিপদজনক লক্ষণও দেখা যায়, যেমন- নাক ও দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ, তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা শরীরের ত্বকে ক্ষত, কিছুক্ষণ পরপরই বমি হতে থাকা আর শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হওয়া এবং শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে যাওয়া।

গর্ভকালীন ডেঙ্গু হলে কী হয়

এ সময় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গর্ভের শিশুর জন্য এটা মোটেই ভালো নয়। গর্ভস্থ বাচ্চার ওপর ডেঙ্গু জ্বরে যে প্রভাব পড়ে তা হচ্ছে-শিশুর জন্মের সময় ওজন কম থাকা, গর্ভপাত হওয়া, পেটের মধ্যে গর্ভস্থ বাচ্চা মারা যাওয়া ইত্যাদি। যদি ডেঙ্গু জ্বর কোনো গর্ভবতীকে আক্রমণ করে তাহলে তার যে কোনো জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে, রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ার মধ্যে যে অনুচক্রিকা বা প্রাচীনের জড়িত সেটি কমে যায়। মায়ের যদি কোন কারণে প্রসবকালীন ডেঙ্গু ধরা পড়ে এবং অস্ত্রপাচারের পরবর্তী সময় ধরা পড়ে তাহলে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং মা মারাও যেতে পারে।

গর্ভকালীন ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে করণীয়

গর্ভকালীন মায়ের ডেঙ্গু জ্বর হলে এ সময়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ করতে হবে, যেমন- ফলের জুস, স্যালাইন, ডাবের পানি ইত্যাদি। শরীরের পানির পরিমাণ ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জয়েন্টে ব্যথা এবং অন্য ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন। ব্লাড প্লেটেলেট কাউন্টার নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্লেটেলেট ৫০ হাজারের নিচে কমে গেলে অনেক সময় প্লেটেলেট ইনফিউশনের প্রয়োজন হয়। অতিরিক্ত বমি হলে অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি করে স্যালাইন এবং অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, রক্ত দেওয়া লাগতে পারে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশারি টানিয়ে ঘুমানো, বাড়ির আশেপাশে বদ্ধ জায়গায় পানি জমতে না দেওয়া, সর্তকতা অবলম্বন অনেক জরুরি। যথাসময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করাই হলো এ রোগ থেকে নিজেকে এবং গর্ভের শিশুকে নিরাপদ রাখার একমাত্র উপায়।

লেখক : ফার্টিলিটি কনসালটেন্ট ও গাইনোকোলজিস্ট, বি আই এইচ এস জেনারেল হসপিটাল ঢাকা।

ডেঙ্গু মশা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম