বিজিএমইএ’র নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ
সার্ভিস চার্জ ২৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৫, ১০:২৭ পিএম
রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কার্যালয়ে নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ-হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আগামী ১ জুলাই থেকে বিজিএমইএ প্রদত্ত সেবার সার্ভিস চার্জ ২৫ শতাংশ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ। একই সঙ্গে কার্যকর ও জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ গঠনের আশা পুনর্বযক্ত করেছে পর্ষদ।
সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ
কার্যালয়ে নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ-হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন নবনির্বাচিত
সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।
অনুষ্ঠানে সদ্যবিদায়ি প্রশাসক
আনোয়ার হোসেন সভাপতিত্ব করেন। তিনি নবনির্বাচিত অফিস বিয়ারার ও পরিচালকদের ফুল দিয়ে
বরণ করে নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রথম সহসভাপতি সেলিম রহমান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল
হক খান, সহসভাপতি রেজোয়ান সেলিম, মিজানুর রহমান (ফাইন্যান্স), ভিদিয়া অমৃত খান, শিহাব
উদ্দোজা চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী এবং পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম রোজালিন, শাহ রাঈদ
চৌধুরী, মিজানুর রহমান, এমএ রহিম, ফয়সাল সামাদসহ অন্য পরিচালকরা।
মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন,
নবনির্বাচিত পর্ষদের প্রধান এজেন্ডা হচ্ছে, একটি কার্যকর এবং জবাবদিহিতামূলক বিজিএমইএ
গড়ে তোলা। বিজিএমইএ'কে একটি সেবাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলা। এজন্য সবচেয়ে
বেশি প্রয়োজন হচ্ছে স্বচ্ছতা। স্বচ্ছতা ছাড়া কোনো সেবা টেকসই হতে পারে না। তাই স্বচ্ছতা
নিশ্চিত করতে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হবে, যেখানে সদস্যরা তাদের আবেদন,
অভিযোগ কিংবা তথ্য অনলাইনেও জমা দিতে পারবেন এবং ট্র্যাক করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সব সময়
বলে থাকি ব্যবসা খরচ কমাতে। সেই কাজটা এবার নিজের ঘর থেকে শুরু করতে চাই। আগামী ১ জুলাই
থেকে বিজিএমইএ সদস্যদের যাবতীয় সার্ভিস চার্জ ২৫ শতাংশ কমানো হবে।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, পোশাকশিল্প
স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে সঙ্গীন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পালটা শুল্ক, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল,
উচ্চ ব্যাংক সুদ এবং মূল্যস্ফীতি, দুর্বল অবকাঠামোগত অবস্থা, মজুরি বৃদ্ধি, জ্বালানির
মূল্য বৃদ্ধির চাপে শিল্প অনেকটা নিষ্পেষিত। এর মধ্যে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে ইসরাইল-ইরান
যুদ্ধ। এই যুদ্ধ শিল্পের জন্য একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ যুদ্ধের ফলে তেলের দাম বৃদ্ধির
আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব অন্যসব খাতের মতো তৈরি পোশাকের ওপরও পড়বে। যা শিল্পের প্রতিযোগী
সক্ষমতা হ্রাস করবে।
তিনি আরও বলেন, গত ৩১ মে বিজিএমইএ
নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেলের অধীনে আমরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। নির্বাচন
শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পোশাক মালিক একটি দল হয়ে গেছি। যে দলের একমাত্র কাজ হচ্ছে
ঐক্যবদ্ধভাবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পোশাকশিল্পকে আরও এগিয়ে
নিয়ে যাওয়া।
ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে
ধরে বাবু বলেন, ইশতেহারে উলে্লখিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ শুরু করব। পোশাকশিল্পের
জন্য স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, এসএমই এবং নন-বন্ডেড ফ্যাক্টরিকে বাড়তি সহযোগিতা
দেওয়া, কাস্টমস-ভ্যাটের অডিট প্রক্রিয়া সহজীকরণ, এলডিসি গ্রাজুয়েশন, মার্কিন পারস্পরিক
শুল্ক নিয়ে কাজ করব। একই সঙ্গে প্রকৃত এক্সিট পলিসি প্রণয়নে জোর দেব।
সদ্যবিদায়ি প্রশাসক আনোয়ার
হোসেন বলেন, গণ-অভু্যত্থান-পরবর্তী সময়ে শিল্পের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা আনার চষ্টো
করেছি। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব পালন করতে চেয়েছি। আশা করি নিরপেক্ষভাবে শিল্পের
স্বার্থে কাজ করতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা পোশাকশিল্পের জন্য একটি রোডম্যাপ
দিয়ে যাচ্ছি। যা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করে বাস্তবায়িত হবে। এই
রোডম্যাপ শুধু উন্নয়নের জন্য নয়, মানবিকতা-নৈতিকতার ওপর ভিত্তিতে বাংলাদেশের পোশাক
খাতকে বিশ্বদরবারে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
দায়িত্ব গ্রহণ-হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিজিএমইএ'র সাবেক সভাপতি আনিসুর রহমান সিনহা, কাজী মনিরুজ্জামান, এসএম ফজলুল হক, ফারুক হাসান, ড. রুবানা হক প্রমুখ।
