বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি
রপ্তানি কোটার ৫০ শতাংশ ডলার নগদায়নের নির্দেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১১ পিএম
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশ ব্যাংক ‘এক্সপোর্ট রিটেনশন কোটা’য় (ইআরকিউ) জমা ৫০ শতাংশ ডলার অবিলম্বে কেটে নেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। রপ্তানির উন্নয়নে ব্যয়ের জন্য রপ্তানিকারকদের বিশেষ সুবিধায় এই ডলার দেওয়া হতো।
এখন নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার রপ্তানিকারকদের ইআরকিউ হিসাব থেকে কেটে ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। এজন্য ডলারের প্রচলিত বিনিময় হারের বিপরীতে টাকা পরিশোধ করতে হবে রপ্তানিকারকদেরকে। ব্যাংক ডলারগুলো অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে। বাকি ৫০ শতাংশ ডলার রপ্তানিকারকদের নিজস্ব হিসাবে রাখতে হবে।
এ বিষয়ে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। চিঠি পাওয়ার পর সোমবারই অনেক ব্যাংক রিটেনশন কোটায় জমা ডলার থেকে অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ নগদায়ন করেছে।
এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হয়। এই চিঠির মাধ্যমে সেই সার্কুলার বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তে রপ্তানিকারকরা আপত্তি করেছেন। তারা বলেছেন, রপ্তানি খাতের উন্নয়নে বিশেষ করে দেশের বাইরে ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে বা তাদের আপ্যায়নে এসব ডলার খরচ করা হয়।
এর মাধ্যমে রপ্তানি বাড়ানোর কাজ করা হয়। এ খাতে ডলারের ব্যবহার কমিয়ে দেওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করা বা রপ্তানির উন্নয়নে খরচ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, ডলার সংকটের মধ্যে বাজারে এর প্রবাহ বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এটি সাময়িক। ডলার বাজার স্বাভাবিক হলে নতুন নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হবে। এছাড়া অনেক রপ্তানিকারক ডলারের বাড়তি দাম পাওয়ার আশায় তা ধরে রাখছেন। ফলে বাজারে ডলারের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারির মাধ্যমে রপ্তানিকারকদের রিটেনশন কোটায় ডলার রাখার পরিমাণ অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হয়। এক্সপোর্ট রিটেনশন কোটায় আগে যারা ১৫ শতাংশ রাখতে পারতেন এখন রাখতে পারবেন সাড়ে ৭ শতাংশ।
আগে যারা একই কোটায় ৬০ শতাংশ রাখতে পারতেন এখন রাখতে পারবেন ৩০ শতাংশ, আগে যারা ৭০ শতাংশ রাখতে পারতেন এখন পারবেন ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ রপ্তানিকারক ভেদে প্রতি দফায় ডলার ধারণ করার ক্ষমতা অর্ধেক কমানো হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর রোববার এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
এর আগে ২২-২৩ সেপ্টেম্বর শক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। এ কারণে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, রপ্তানিকারদের রিটেনশন কোটায় গত ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্তিতির ভিত্তিতে ৫০ শতাংশ অর্থ রপ্তানিকারকের হিসাবে সংরক্ষণ করে বাকি ডলার প্রচলিত বিনিময় হারের ভিত্তিতে অবিলম্বে নগদায়নের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হলো।
ফলে ব্যাংকগুলো এখন গত ২১ সেপ্টেম্বর রপ্তানিকারকদের ইআরকিউ কোটায় যেসব ডলার ছিল তা থেকে অর্ধেক নগদায়ন করে ব্যাংক তার নিজস্ব হিসাবে নিয়ে যাবে। এর বিপরীতে রপ্তানিকারকের হিসাবে সমপরিমাণ টাকা জমা করে দেবে।
ব্যাংকওইসব ডলার অন্য গ্রাহকের এলসি খোলা বা ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করতে পারবে। বাকি অর্ধেক ডলার রপ্তানিকারকরা তাদের ব্যবসার উন্নয়নে খরচ করতে পারবেন।
