র্যাপিডের সভায় ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ যে থাকবে এমন কোনো কথা নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১০:৫০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, যেহেতু ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সেহেতু বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকবেই এমন কোনো কথা নেই।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ইচ্ছা করেই দুই একটা জায়গায় আমরা রেখেছি এমন যাতে অন্তত আলোচনার কিছু সুযোগ থাকে। একটা হলো কালোটাকা নিয়ে তো অন্তত বেশ আলোচনা হলো এবং আমাদের এই সরকারের তো আর কোনো দল নাই, কিছু নাই। সব কিছুই হলো সমর্থন এবং নৈতিকতা। এটাই তো আমাদের ভিত্তি। কাজেই কালোটাকা রাখা হয়েছে এবং এটা যে থাকবে এমন তো কোন কথা নেই। তবে আমি এখানে নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে না পারলেও এটুকু বলতে পারি ওটাকে অপ্রদর্শিত টাকা আয় হিসাবে দেখিয়ে উচ্চতম যেই যেই করের হার তার সঙ্গে অন্তত আবার ৫ শতাংশ জরিমানা তো যোগ করা উচিত। পেনাল্টি সেরকমভাবে যদি রাখা যায় তাহলেও রাখা যেতে পারে।
শনিবার রাজধানীর এক হোটেলে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মঞ্জুর হোসেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, র্যাপিডের চেয়ারম্যান এম.এ.রাজ্জাক এবং র্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম. আবু ইউসূফ। অতিথি ছিলেন-বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তো একটা ট্যাগ (রাজনৈতিক পরিচয়) থাকেই। হয় সাদা দল, না হয় নীল বা অন্য কিছু। তবে আমি উপাচার্য নিয়োগের জন্য যাদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করেছিলাম, তাদের কিছু মানদণ্ডের কথা বলে দিয়েছিলাম। এক্ষেত্রে শিক্ষকের সাইটেশন সংখ্যা, সততা, দক্ষতা প্রভৃতি বিষয় দেখার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও মানদণ্ড ঠিক করে দিয়েছিলাম। এখানে আওয়ামী লীগ তো হওয়া যাবে না, কাজেই মৃদু বিএনপি হওয়া যাবে, অথবা নিষ্ক্রিয় বিএনপি হওয়া যাবে। উপাচার্য নিয়োগ দিতে গিয়ে যোগ্য লোক খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়েছিল। নির্দলীয় সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, সবচেয়ে অসুবিধা হচ্ছে এতগুলো পদ খালি রয়েছে, কিন্তু এই পদে আমি কাকে নিয়োগ দেব, তা খুঁজে পাই না। কারণ, রাজনৈতিক দল না হওয়ায় আমরা লোকজন বেশি চিনি না।
তিনি আরো বলেন, আমি শিক্ষা উপদেষ্টা থাকার সময় আমার একজন বন্ধু এবং শিক্ষাজীবনে আমার রুমমেট মির্জা ফখরুল (বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর)। তাকে বলেছিলাম, তুমি দলীয় বিবেচনা বাদ দিয়ে বন্ধু হিসেবে তোমার পরিচিতদের কাছ থেকে শিক্ষা খাত ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগের জন্য কিছু সৎ লোকের তালিকা দাও। তোমরা আগে সরকার চালিয়েছ, তোমাদের দল আছে, দলীয় এত লোক আছে। আমাকে কিছু সৎ মানুষের তালিকা দিতে পারো। আমার বলার পরে তার (ফখরুল) উত্তর ছিল, আমাদের (বিএনপি) কেউ গত ১৫ বছরে তো উঠতেই পারেনি। কাজেই সে দুর্নীতিবাজ হবে, কি দক্ষ হবে, আমি বুঝব কী করে। মির্জা ফখরুল আমার বন্ধু হিসেবে বন্ধুর মতোই বলেছে। যে সমস্যাটা বুঝতে পেরেছে। কিন্তু তার দলের (বিএনপি) থেকে আমাকে তালিকা দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, যখন আমরা বিদায় নেব, তখন আমরা কী কী করে যাচ্ছি আমি একটা লিস্ট করে যেতে চাই। যাতে করে সবাই জানুক। আমাদের প্রচারণার জন্য না পরবর্তী সরকারের জন্য যেহেতু উদাহরণ হিসেবে থাকে এবং তার থেকে বিচ্যুতি হলে অন্তত সবাই চোখে পড়ে।
তিনি বলেন, আগামী বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে কিছু বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। উপকারভোগীদের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাদেরকে প্রতি উপকারভোগীতে যে ভাতার সামান্য বৃদ্ধি করার চেষ্টা করা হয়েছে তার থেকেও বেশি হলো যে একটা চলমান প্রক্রিয়াা আমরা শুরু করেছি। যেখানে আমরা আমরা জানি যে উপকারভোগী যারা তাদের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ ভাগ আসলে উপকার পাওয়ার যোগ্য না, তারা হয় ভুতুড়ে না হয় তারা রাজনৈতিকভাবে এর মধ্যে ঢুকেছে। মুশকিল হলেও এগুলো বাছাই করা হচ্ছে।
