বিমান চলাচলে নানা বাধা
বেবিচক সামলাতে পারছে না কেন?
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) রয়েছে এখন বড় সংকটে। এয়ারক্র্যাফ্ট ও পাইলট সংকট এ সংস্থার মূল সমস্যা এখন। এ সমস্যার কারণে আন্তর্জাতিক রুটে দিনে ২৫টিরও বেশি স্লট পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এতে বছরে হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে বিমান কর্তৃপক্ষ। বেবিচকের নানা ত্রুটিপূর্ণ আইনের কারণে সামর্থ্য অনুযায়ী এয়ারক্র্যাফ্ট লিজ নিতে পারছে না বিমান। এমন এক অবস্থায় এবারের হজ ফ্লাইট চালাতে গিয়ে বিমান সংকটে আগামী ৩ মাসের জন্য বন্ধ করা হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক রুট।
শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে সব আন্তর্জাতিক রুটের বেশকিছু ফ্লাইটও ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। বেবিচকের সিদ্ধান্ত ছিল নিজস্ব বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর বিমান দিয়ে এবার ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট চালানো হবে। এ লক্ষ্যে দুটি বিমান ভাড়া করা হবে। কিন্তু পরপর ৩ দফা দরপত্র আহ্বান করেও কোনো বিমান ভাড়া পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল চতুর্থ দফায় আবারও বিমান ভাড়া নিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু বেবিচকের অবাস্তব, অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের কারণে এবারও পাওয়া যাচ্ছে না বিমান। দেশের বিমান সংস্থাগুলো এয়ারক্র্যাফ্ট লিজ নেওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ বছরের বেশি বয়সি বিমান ভাড়া নিতে পারছে না শুধু বেবিচকের কথিত নিষেধাজ্ঞার কারণে। উল্লেখ্য, পৃথিবীর কোথাও ১৪ বছর বয়সি ভাড়ার বিমান নেই। অথচ বেবিচক এক বছর কমিয়ে ১৪ বছর বয়সি বিমান ভাড়া করার জন্য দরপত্র আহ্বান করার কথা বলেছে।
আমরা এর আগে বেবিচকের নানা অব্যবস্থাপনা, কখনো কখনো দুর্নীতির খবর দেখেছি। কিন্তু প্রচুর লেখালেখি হলেও সংস্থাটি এখনো একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসাবে দাঁড়াতে পারেনি। সাম্প্রতিককালে বিমানযাত্রীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে বেবিচকের দায়িত্ব ও কর্মক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত হয়েছে বলা যায়। কিন্তু অব্যবস্থাপনা ও ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যদি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমতে থাকে, তাহলে এ প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকাই কঠিন হবে। এয়ারক্র্যাফ্টের অভাবে ফ্লাইট ছেঁটে ফেললে যাত্রীদের যে দুর্ভোগ হবে, সেটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার। প্রয়োজনের তুলনায় পাইলটের সংখ্যার ঘাটতি বেবিচকের সামগ্রিক সংকটের একটি বিশেষ দিক। প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ পাইলটের অভাব কীভাবে পূরণ করা যায়, তা নিয়েও ভাবতে হবে। আমরা আকাশপথের যাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী বেবিচককে একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসাবে দেখতে চাই।
