কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডব
কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কিছুদিন আগে যুগান্তরের সম্পাদকীয় পাতায়ই আমরা লিখেছিলাম-দেশের, বিশেষত রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভালো নয়, মোহাম্মদপুরের দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়। তখন আমরা মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাংয়ের দিকে বেশি করে আঙুল তুলেছিলাম। বেশ কিছুদিন পর সেই মোহাম্মদপুরেই কিশোর গ্যাং আরেকটি দুর্ধর্ষ অমানবিক ঘটনা দেখিয়েছে আমাদের। ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে মোহাম্মদপুরের একটি বাসার সামনে দু’জন কিশোর ঘোরাঘুরি করছিল। এ সময় রাব্বি নামের এক যুবক তাদের ঘোরাঘুরির বিষয়ে জানতে চায়। এ নিয়ে কিশোরদ্বয়ের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এর ৪ থেকে ৫ মিনিটের মধ্যে ১৫-২০ জনের একটি কিশোর দল দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রথমে রাব্বিকে কুপিয়ে জখম করে। তাকে বাঁচাতে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে বাসায় ঢুকে একে একে সাতজনকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় কিশোর দুর্বৃত্তরা।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা লক্ষ করে আসছি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পুলিশের মনোবল ভেঙে যাওয়ায় তাদের অধিকাংশই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছিলেন না। পুলিশের হৃত মনোবল ফিরে আসতে শুরু করলেও রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অপরাধীরা তাদের অপরাধকর্ম চালিয়েছিল নির্বিঘ্নে, তাদের সেই চরিত্র পালটায়নি। বুধবারের ঘটনা আমাদের এই বার্তাই দিচ্ছে যে, অপরাধী, বিশেষত কিশোর গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা না করলে তাদের দমানো যাবে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তাই উচিত হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর সব এলাকার দুর্বৃত্ত ও অপরাধীদের কঠোরহস্তে দমন করার নির্দেশ প্রদান করা। ঢাকাকে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, নিরাপদ শহর হিসাবে গড়ে তুলতে হলে এর কোনো বিকল্প নেই। অপরাধ দমনে বিলম্ব ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। তার আগেই রাজধানীকে অপরাধমুক্ত করতে হবে। অপরাধী, বিশেষত কিশোর অপরাধীরা বেপরোয়াপনার সীমা অতিক্রম করেছে। তাই অপরাধ দমনের বিষয়টি সরকারের প্রধান এজেন্ডা হওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা।
