চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে অচলাবস্থা
অবিলম্বে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা হোক
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দেশের অন্যতম বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকার বিষয়টি শুধু উদ্বেগজনক নয়, অমানবিকও বটে। রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন শত শত চক্ষু রোগীর চিকিৎসার শেষ ভরসাস্থল। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ চোখের উন্নত চিকিৎসার আশায় দেশের দূর-দূরান্ত থেকে এ হাসপাতালে ছুটে আসেন। সাশ্রয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য আধুনিক সরঞ্জামসমৃদ্ধ এমন হাসপাতাল দেশে আর নেই। অথচ অচলাবস্থার কারণে সেবাপ্রত্যাশীরা ফিরে যাচ্ছেন বিনা চিকিৎসায়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। উল্লেখ্য, সম্প্রতি চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহতদের সংঘাতের পর থেকে হাসপাতালটিতে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। চিকিৎসক-কর্মচারীরা বলছেন, সেবার অনুকূল পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের সব ধরনের সেবা বন্ধ থাকবে।
আমরা মনে করি, এ সংকটের পেছনে যে কারণই থাকুক না কেন, অবিলম্বে তার নিরসন হওয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টদের এটি মনে রাখতে হবে যে, হাসপাতালে অনেক রোগীরই অস্ত্রোপচার নির্ধারিত ছিল, যা এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেছে। চোখের মতো স্পর্শকাতর ও সময়নির্ভর চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ ধরনের বিলম্ব অনেক সময় চিরদিনের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারানোর কারণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে এর দায় কার ওপর বর্তাবে? রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ধর্মঘট, আন্দোলন কিংবা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে একটি জাতীয় পর্যায়ের হাসপাতালের সেবা বন্ধ রাখা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। হাসপাতাল পরিচালক যুগান্তরকে জানিয়েছেন, চিকিৎসা কার্যক্রম দ্রুত চালু করতে মন্ত্রণালয় থেকে কাজ করা হচ্ছে, তবে এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি; রোগীদের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণের সামর্থ্য সবার থাকে না; এ কারণে দরিদ্র মানুষ সরকারি হাসপাতালের মুখাপেক্ষী হয়। তাই আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, অবিলম্বে বিরোধ নিরসন করে হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করুন। একই সঙ্গে সরকারের উচিত এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে একটি কার্যকর ও স্থায়ী নীতিমালা প্রণয়ন করা, যাতে ভবিষ্যতে চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের আর এমন ভোগান্তির শিকার হতে না হয়। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করা হবে, এটাই কাম্য।
