ঈদ উদযাপন
স্বস্তির আবহ অব্যাহত থাকুক
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দীর্ঘ দেড় দশক পর ফ্যাসিবাদী শাসনমুক্ত পরিবেশে এবার দেশের মানুষ স্বস্তিতে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে পেরেছেন। ঈদের ছুটিতে রাজধানী এবং বিভিন্ন শহর অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেলেও গ্রামাঞ্চলে জনজীবন হয়ে উঠেছিল উৎসবমুখর। ঈদে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে যে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা জোরদার করা কঠিন নয়, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। ঈদের পর রাজধানীমুখী ঈদযাত্রায় ফিরতি ট্রেন, লঞ্চ ও বাসে যাত্রীর তেমন চাপ নেই। এবার সড়কপথে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তি ছিল কম। অতীতের মতো রেলের শিডিউল বিপর্যয়ও দেখা দেয়নি এবার। নৌপথেও ঘটেনি দুর্ঘটনা। তবে সড়কপথে এবারও দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঈদের আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি, তাদের অনেকে ঈদের পর ঢাকা ছেড়ে গ্রামে গেছেন। গত দুদিন রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ স্টেশন এবং আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতের সবকটি পয়েন্ট ছিল লোকে লোকারণ্য। অনেকদিন পর কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল দেখে স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পর্যটনসংশ্লিষ্টরা। এবারের ঈদে পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কুয়াকাটা সৈকতও। ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে প্রাণ হারিয়েছেন এক পর্যটক ও তার তরুণ ছেলে। ৯ জুন এ দুর্ঘটনা ঘটে। একইদিন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকায় পানিতে ডুবে এক কিশোর পর্যটক মারা গেছে। ঈদের ছুটিতে পার্বত্য এলাকায় এবার পর্যটকের আগমন গত কয়েক বছরের তুলনায় কম হয়েছে। কেন এমনটি হলো, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এ খাতে আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে দৃষ্টি দিতে হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে জুনের প্রথম তিন দিনে দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করা হলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে নিশ্চয়ই।
কয়েক বছর ধরে ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কুরবানির পশুর চামড়া নদী-নালা বা সড়কে ফেলে দেওয়া কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলার মতো ঘটনা ঘটছে। এবার চামড়ার দাম কিছুটা বেশি হলেও অনেক স্থানে একই ঘটনা ঘটেছে। অতীতে চামড়ার বাজারে ব্যবসায়ীদের কারসাজির ঘটনাও ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চামড়ার ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কুরবানির চামড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন চামড়ার টাকার প্রকৃত হকদার দেশের দরিদ্র মানুষ। এক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের তৎপরতার বিষয়টি বহুল আলোচিত। প্রতিবছর কুরবানির চামড়া নিয়ে কেন সংকট তৈরি হয়, তা খতিয়ে দেখা দরকার। নানামুখী সংকটে চামড়ার একটি বড় অংশ নষ্ট করে ফেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামগ্রিকভাবে চামড়াশিল্প। এক্ষেত্রে কী ধরনের কারসাজি হয়, তা খতিয়ে দেখে সিন্ডিকেটের মূলোৎপাটনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
